আচ্ছা, আমি হচ্ছি সাদ্দাম। তো অনেকেই অনেক আলাপ করলেন, আমি ঐসব জায়গাগুলো কানেক্ট করে কিছু কথা বলবো।
রিফাত ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় হইছে মূলত রাইসু ভাইয়ের থ্রুতে। মানে রাইসু ভাইয়ের থ্রুতে বলতে, রাইসু ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয়টা আগে হইছিল যেহেতু আর রাইসু ভাই রিফাত হাসানের পোস্ট শেয়ার করলে পরে রিফাত হাসানের সাথে পরিচয় ঘটে যেহেতু সেহেতু রাইসু ভাইয়ের থ্রুতেই তো।
তো রাইসু ভাই রিফাত ভাইয়ের একটা পোস্ট শেয়ার করছিল, এখন আর মনে করতে পারতেছি না কী নিয়ে ছিল সেই পোস্ট — তো ঐখান থেকে মূলত আমি, ইয়াকে মানে রিফাত ভাইকে পাইলাম।
অই সময়টা যে সময়টাতে রিফাত ভাইয়ের লগে পরিচয় হওয়ার ঘটনাটা ঘটে, সময়টা বাংলাদেশের জন্য ক্রিটিক্যাল একটা সময় ছিল। সময়টা হচ্ছে এরকম সময়, যখন হচ্ছে শাহবাগের আইডিয়াগুলার প্রতি আমি ক্রিটিক্যাল হয়ে উঠতেছি। শাহবাগের আইডিয়াগুলার প্রতি ক্রিটিক্যাল হওয়ার দিক থেকে রাইসু ভাই হেল্প করছেন। মানে রাইসু ভাইয়ের ডাইভারসিফাইড পজিশন নেয়াগুলি ওয়ার্ক করছিল আর কি। রাইসু ভাই কোন পরিচয় লন না বা কোন একটা পরিচয়ে ভক্তি দিয়া তার চিন্তাগুলি তিনি করতে থাকেন না। আর ডাইভারসিফাইড পজিশন নেয়া মানে কোন কিছুর প্রতি ডগম্যাটিক না হয়ে ওঠার ব্যাপারটা যা আমি রাইসু ভাইয়ের মধ্যে পাইলাম ও নিলাম। নেয়ার পর দেখলাম যে সেক্যুলারিজম, প্রগতিশীলতা, বাঙালী জাতীয়তাবাদের নামে যা যা আমরা করতেছিলাম তা আমাদের এক্সট্রিম কইরা তুলতেছে। লিবারালিজমের নামে আমরা মূলত ডগম্যাটিকই হইয়া উঠতেছি।
এই যে ক্রিটিক্যাল হইয়া উঠলাম, এই সময়টাতেই রাইসু ভাইয়ের থ্রুতে রিফাত ভাইকে পাওয়া। তখনো আর কি আমার হুমায়ূন আজাদ, রিচার্ড ডকিন্স, আরজ আলী মাতুব্বর দিয়া বিভোর হইয়া থাকা সময়কাল। ব্রডার পলিটিক্যাল ও ফিলোসফিক্যাল এরিয়াগুলাতে ঢুকার জায়গাগুলা ক্রিয়েট হয় নাই। বা, রিজনের ব্যাপারে ক্রিটিক্যাল হয়ে ওঠা, মডার্নিটির ক্রাইসিস ধরতে পারার ক্যাপাসিটি হয় নাই। তো এইগুলা দেখা গেলো, রাইসু ভাইয়ের সাথে পরিচয় হওয়ার পরে এগুলা ঘটতেছে। এবং যেগুলা চোখের সামনে ঘটতেছে ঐগুলার প্রতি আমি ক্রিটিক্যাল হয়ে উঠতেছি। এই ক্রিটিক্যাল হওয়ার টাইমেই রিফাত ভাইয়ের লগে পরিচয়।
অই টাইমে ফরহাদ ভাইকেও পড়তে শুরু করা। তখন চিন্তার স্পেইসটা আরো বড় হইতে পারলো। রাইসু ভাইকে পইড়া যেটা হইলো কেমন জানি ইন্ডিভিজ্যুয়ালিস্টিক হইয়া পড়লাম। সোসাইটি মানে কমিউনিটির ব্যাপারে অন্য ধরণের অপছন্দ তৈরি হইলো। এই অপছন্দের রূপ শাহবাগের ডগম্যাটিক রূপ না। তবে তা অনেকটাই পশ্চিমা লিবারালিজমের রূপ। ফরহাদ ভাইকে পইড়া ব্যক্তি ও সমাজকে কীভাবে ডিল করবো সেটা পরিষ্কার হইতে থাকলো। কলোনিয়াল হীনমন্যতা কাটাইয়া উইঠা সিনা টানটান কইরা খাড়াইতে শিখাইলো ফরহাদ মজহার। পলিটিক্যাল হইয়া উঠলাম। পুরাদস্তুর ক্রিটিক্যাল হইয়া উঠলাম। ইসলাম প্রশ্ন ডিল না কইরা যারা মুসলমানদের আদার করে তাদের ব্যাপারে ক্রিটিক্যাল হইলাম। লিবারাল ডেমোক্রেসি তথা এক্সট্রিম পুঁজিবাদী ব্যবস্থার ব্যাপারে ক্রিটিক্যাল হইয়া উঠলাম।
আর অই টাইম ফ্রেমের মধ্যেই দেখলাম যে, রিফাত ভাই আলাপ করতেছে, কেউ শিবির হইলেই তারে মাইরা ফেলা যাবে না। বা কেউ জামাত করলেই তারে যে পলিটিক্যাল হেরেসমেন্ট করা হবে এব্যা পারগুলা করা যাবে না। ওয়ার অন টেরর প্রজেক্টের মুখোশ উন্মোচন হইতে থাকলো তখন। আর মানবাধিকার এর জায়গা থেকেই যে রিফাত ভাই এগুলো দেখাইতে লাগলো সেটা বেশ ইন্ট্রেস্টিং লাগলো আমার কাছে। এগুলারে আমি কেন নিতে পারলাম পরে? মানে পরে মনে হইল যে, হ্যাঁ, তাইতো আসলে। মানে কাওকে ট্যাগ দিয়া মাইরা ফেলা হবে আর সেটাকে বৈধতা দেয়া হবে কেন? তো এসব ব্যাপারে ক্রিটিক্যাল হয়ে উঠার পেছনে লাইক রিফাত ভাই, রাইসু ভাই, এরা হেল্প করতে থাকলো। পরে মানে আফটার শাহবাগ এন্ড শাপলা আমরা দেখছি প্রতিপক্ষকে কীভাবে জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে বা কোরান ও ইসলাম বিরোধী বলে দমন করা হয়েছে, হচ্ছে। ফলে আমরা দমনমূলক সোসাইটিকে আলাপ আলোচনা মূলক তথা ক্রিটিক্যাল করে তোলার অবস্থান নেই।
তো এইটা হইল একধরনের অরিয়েন্টেশন, আমি আসলে এখানে ব্রডার যে ইন্টেলেকচ্যুয়াল এলাই আছে, সেদিকে নোটিশ করতে চাইতেছি। অনেকেই আছে যে বুদ্ধিবৃত্তিক পরিসরে আছে সে পরিসরের মধ্যেই বলে, আমি অমুক বুদ্ধিজীবী এরিয়াতে বিলং করি সো আরেকটা বুদ্ধিজীবি এরিয়ারে বাদ দিতে হবে। ও রকম না। গত ১০ বছরে এখানে একটা বড় ইন্টালেকচ্যুয়াল পরিসর তৈরি হইছে, সেটাকে ধইরা ইনক্লুসিভ ওয়েতে আগাইলে মনে হয় ভালো হয়।
মানে ধরেন যেমন, ফরহাদ মজহার, ব্রাত্য রাইসু, মোহাম্মদ আজম, রিফাত হাসান, মোহাম্মদ রোমেল, সালাহউদ্দিন শুভ্র, মাহাবুব মোর্শেদ, রক মনু, তারপর আপনার ইমরুল হাসান, অরূপ রাহী…আরো অনেকের নাম হয়তো বাদ পরে গেলো, এই যে একটা পেরিফেরি, আপনি দেখবেন যে আপনি এদিকে ঘুরতেছেন কোন না কোন ভাবে। কীভাবে ঘুরতেছেন? সেটা আপনি প্রথমে ডুকবেন হইছে ল্যাংগুয়েজ দিয়া। মানে এই যে দিয়া মিয়া বলতেছি না? এরকম তো ধরেন ছিলাম না, তো এটা হইছে ধরেন ঢুকার দরোজা একরকম, মানে আপনি যাস্ট ঢুকলেন। এখন ঢুকার পর আপনি কৈ কৈ যাবেন, হু? এই যাওয়াগুলার দিকে নজর দিলেই দেখবেন যে আপনে একটা বুদ্ধিবৃত্তিক নকশা পাইয়া যাবেন।
মানে এটা মনে করার দরকার নাই যে আমি অমুকরে ফালাইয়া দিলাম। অনেকসময় সেইম ইন্টেলেকচুয়াল পরিসরের কাওরে ফালাইয়া দিয়া মনে হয় আমি তো বাইর হইয়া আসলাম। কিন্তু, বুঝছেন, এই ইন্টেলেকচ্যুয়াল এরিয়াতে একটা জায়গা তৈরী হইছে, যেটা মূলত আসলে লিড দিবে বাংলাদেশ। মানে এই এরিয়াটাই লিড দিবে, যে এরিয়াটা আমি দেখাইতে চাইতেছি। এখানে কাউরে বাদ দিয়া কিছু হবে না। মানে আমি ঐ জায়গাটাই বুঝাইতে চাইতেছি। যেহেতু মাহবুব ভাইয়ের একটা অন্যধরণের ইয়া ছিলো। একটা টোন ছিলো যেটা ইনক্লুসিভ মনে হয় নাই আর কি আমার কাছে। টু সাম এক্সটেন্ট। কিন্তু ঐ জায়গাটায় আপনারা ইনক্লুসিভলি ভাবতে পারলে ভালো হয় আরকি। যাই হোক, তারপরে, আমি আর যে কয়েকটা পয়েন্ট বলতে চাই,
(এই পর্যায়ে অডিয়েন্স থেকে কেউ কথা বলেন:
অডিয়েন্স: এটা সবাই মিলে লিড দিবে, এখানে সবাইকে ইনক্লুসিভ তো হতে হবেনা।
সাদ্দাম : না, সবার মানে বুদ্ধিজীবীদের ইনক্লুসিভ হইতে হবে না। আমি বলতেছি যে, এখানে যারা আছে,
অডিয়েন্স: এটা যদি একটা শর্ত হিসেবে রাখে তাইলে কিন্তু এটা এটার উল্টাটা ঘটতেছে।
সাদ্দাম: আমি আসলে ইনক্লুসিভ হইতে হবে বলতে, যারা এই বুদ্ধিজীবিরা আছে, তাদের ইনক্লুসিভ হইতে হবে সেটা আমি বলি নাই। আমি বলতেছি যে, যারা শুনতেছে, তারা যাতে ইনক্লুসিভলি এটা ভাবতে পারে। যে আমি যে বুদ্ধিবৃত্তিক পরিসরের কথা কইতেছি সেটা কীভাবে ফাংশন করে আসলে। ঐটা আমি বলছি।)
ও, আমি আরো যা বলতে চাইতেছিলাম, মাহবুব মোর্শেদ যে বললেন, ফরহাদ মজহার লেনিনিস্ট কায়দায় কাজ করে, ঐটা নিয়া। মানে আমি এতো দ্রুত ডিসিশনে না যাইতে বলবো। দ্রুত ডিসিশনে না যাওয়া কেন? আপনি রাজনীতির মাঠে সম্ভাবনার জায়গাটা তো ওপেন রাখবেন, একটা সিদ্ধান্ত টাইনা হাত তো ধুইয়া ফেলবেন না। মানে ধরেন, আমি লাস্ট কিছুদিন ধইরা পড়ালেখা করতেছিলাম, ইয়া নিয়ে, স্কেন্ডেনেভিয়ান দেশগুলা নিয়ে, লাইক সুইডেন, ডেনমার্ক, আপনার তারপরে নরওয়ে, ওদের রাজনীতি নিয়ে। তো ওরা হচ্ছে ডেমোক্রেটিক স্যোশালিজমের একটা জায়গায় আসছে। ওরা ওভাবে ধর্মকে ফালাইয়া দিতেছে না, কমিউনিজমরে না, ক্যাপিটালিজমরেও না। মানে ওদের কোন এক্সট্রিম পজিশন লইতে হইতেছে না। তাইলে ওরা কী করতেছে? ওরা পলিসি মেকিং করতেছে ব্যক্তি ও সমাজরে মাথায় রাইখা। ওরা আসলে পুরাপুরি লাইক, কাঁছাখোলা বাজার ব্যবস্থাতে যায় না, আবার স্টেইট পুরা কন্ট্রোল নিয়া নিবো সে জায়গাতেও যায় না। ওরা এখানে আসলে কোন আইডিয়ার ব্যাপারে ডগম্যাটিক না হইয়া আইডিয়াগুলি থিকা যা যা নেবার ও যা যা বর্জন করবার তা কইরা একটা সোসাইটি নির্মাণ করছে যেখানে ইন্ডিভিজ্যুয়াল রাইট যেমন খর্ব হয় না, সোসাইটির সামগ্রিক কল্যাণও হয়।
ওরা আসলে চিন্তার জায়গাগুলা ছড়াইতে পারছে। মানে ওরা চিন্তা করছে যে কীভাবে এটারে গুছানো যায়, কীভাবে স্ট্রাকচারটা দাঁড় করানো যায়, কিভাবে কাজ করা যায়। আমার মনে হয়, ফরহাদ মজহারের এইরকম একটা জায়গা আছে। সে সবসময় ওপেন থাকে যে, ওকে তাইলে ইসলাম থেকে নিবো, কমিউনিজম থেকে নিবো, ক্যাপিটালিজম থেকে নিবো, বাংলার ভাব থেকে নিবো অমুক জায়গা থেকে নিবো, তমুক জায়গা থেকে নিবো, মানে নানান জায়গা থেকে নিয়ে তার একটা আইডিয়া বিল্ড করার একটা জায়গা থাকে। নট লাইক যে, তিনি আসলে লেনিনিস্ট কায়দাতেই পরিবর্তন চায়, এরকম কোন এক্সট্রিম পজিশন ফরহাদ ভাইয়ের আছে বইলা আমার মনে হয় নাই। মানে যেটা মাহবুব ভাই বলতে চাইছে ঐটা আমার মনে হইছে যে নাই। তো ঐ জায়গা থেকে আসলে কানেক্টিভিটি বাড়ানো যাইতে পারে।
রিফাত ভাই, আপনাকে ধন্যবাদ। মানে অনেকদিনের পরিচয়। আপনি ঢাকায় আসছিলেন, দেখা হইছিল এইখানে, তারপর, এটা একটা ভালো ইয়া হইছে। আর আমি আশা করবো এই যে ইন্টেলেকচ্যুয়াল পেরিফেরি, এদের সবাইকে যেন আমরা ইনক্লুসিভলি বুঝার চেষ্টা করি এবং আমরা কোন্ ধরণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে থেকে ব্যক্তি ও সমাজকে ডিল করবো সেটা যেন আমরা পরিষ্কার করতে থাকি। সবাইকে ধন্যবাদ।
শেখ সাদ্দাম হোসেন, লেখক, চিন্তক।