গতরাতেই বইটা পাইলাম। তিনশ পেজের বই, এত চমৎকার প্রোডাকশন এর বই সহসা পাই না। রাতে খাম খুলে রেখে আজকে ঘুম থেকে উঠে শুরু করলাম।
তো বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আমি ‘সভারিন”— সো ফার ইহজাগতিক লোকাচার ইজ কন্সার্ন্ড।
আমি এইটা বিশ্বাস করি, পাঠকেরও একটা অবস্থা আছে, একটা অবস্থান আছে। যেমন আজকে এইরকম অলস শুইয়া পড়তেছি জন্য ছত্রে ছত্রে মুগ্ধ হইতেছি। ভালো লাগতেছে। হয়ত সান’ডে তে পড়তে বসলে, অফিসের তাড়ায়, মিটিংয়ের প্রস্তুতির মধ্যে, তখন হয়ত অনেক ক্রিটিকাল থাকতাম, ঠিক ক্রিটিকাল হয়ত না, অতটা মনোযোগ, অতটা মুগ্ধতা নাও থাকতে পারত।
ব্যক্তিগত জীবন তো আছেই, এছাড়াও, পাঠকের জন্য এই দুঃসহ সময়ে যেকোনো কিছু পাঠই একটা চ্যালেঞ্জ। এই নৈরাজ্য আর অধিকারহীনতার সময়ে কোনো পাঠই আসলে পাঠ হয়ে উঠতে পারে না৷ ফলে লেখক এবং পাঠকের যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে সেইটা, আমার মনে হয়, একটা অস্বাভাবিক সম্পর্ক। আবার অনেকটা বিপ্লবাত্মকও বটে।
এই মহামারি, মৃত্যু, যুদ্ধ, বন্দীত্ব— এসবের মধ্যেই লেখক আমার কাছে হরফে হাজির হইলেন, আমাদের সম্পর্কটা সেভাবেই গড়ে উঠতেছে। এই সম্পর্ক হয়ত অন্যরকম হইত যদি অন্য কোন সময়ে অন্য কোন বাস্তবতায় একই টেক্সট কিংবা কন্সপিরেসি বা রূপকথা নিয়া তিনি হাজির হইতেন।
ফলে অনেকটা জল্লাদখানায় বইসা কবিতা পাঠের মত কইরাই পাঠ চলতেছে। গন্তব্য নিয়া কোন আশা বা হতাশা নাই। তবে ‘ওর্থ রিডিং’ বলতে যা বোঝায়, এই বই তা।
কোথাও পৌঁছানোর তাড়া না থাকলে রিফাত হাসানের ‘টেক্সট কন্সপিরেসি ও রূপকথা’ বইটা একটা চমৎকার জার্নি হইতে পারে বলে মনে হইতেছে। বাকিটা সম্পূর্ণ পড়ার পর বলা যাবে।
মুরাদ কিবরিয়া, লেখক।