Debates, পাঠ প্রতিক্রিয়া, সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও রাজনীতি

নাশাদ ময়ুখ

ক্যাওয়াটিক সময়ে রিফাত হাসান পাঠ

May 17, 2024   0 comments   9:49 am
Guest Author: নাশাদ ময়ুখ

যে কোন ফিলোসফিক্যাল বইপত্র, লেখালেখি পড়তে গেলে পাঠকমাত্রই নিজের সাথে নিজের বোঝাপড়ার একটা জার্নির মধ্যে থাকে বইলা মনে হয়। বই পড়তে পড়তে আমার প্রশ্নটা ছিল, আমি কি তাইলে রাজনৈতিক মানুষ? বা আমার বন্ধু কি তাইলে রাজনৈতিক মানুষ? আমি যাদের চিনি তাদের মধ্যে কারা কারা রাজনৈতিক মানুষ? রাজনৈতিক মানুষ হয়ে উঠতে পারাটা কতোটুকু জরুরি?

Share

রিফাত হাসানের ‘সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও রাজনীতি’ বইটা নিয়া আলাপ শুরুর আগে দুইটা কথা সংক্ষেপে বইলা নিতে চাই।

বইটার প্রথম প্রকাশ ২০১৪ তে হইলেও আমার কাছে এইটার সেকেন্ড এডিশান (২০১৬) এসে পৌঁছায় সামহোয়্যারইন ব্লগে লেখালেখির সূত্রে পরিচিত এক বন্ধু মারফত। পেশাগত ব্যস্ততায় তখন বইটা পড়া হয়ে উঠে নাই অনেকদিন। যদ্দূর মনে আছে এই বইটা হাতে আসার বেশ কিছু দিন পর ফরহাদ মজহারের ‘ব্যক্তি বন্ধুত্ব ও সাহিত্য’ ( প্রথম প্রকাশ-২০১৬) বইটা পড়ার অবসর পাই। পড়া শুরু করি, ফরহাদ মজহারেরটা। সমসাময়িক, দুইজন বুদ্ধিজীবীর প্রায় কাছাকাছি নামের দুইটা বই মেইনলি আগ্রহী করে বইটা পড়তে। তারপর, রিফাত হাসানের লাল বইটা পড়া শুরু করি।

যে কোন বই পড়তে গেলে একদম শুরু থেকে পড়ার অভ্যাসবসতঃ বই এর ফ্ল্যাপ, আইএসবিএন নাম্বার, সত্ত্ব, প্রকাশক, ছাপাখানার নাম, এইসব আপাত গুরুত্বহীন ব্যাপারগুলা অজান্তেই পড়ি। পড়তে গিয়া বইটার পাবলিশার দুয়েন্দে পাবলিকেশনসের অফিসের ঠিকানায় চোখ আটকে গেলো। আমার বিজনেস শুরু হয় ঐ ঠিকানা থেকে। এই তুচ্ছ মিল একধরনের কানেক্টিভিটি তৈয়ার করে দিলো যেন। একটা সম্পর্ক তৈরি হইলো। বইটা সিরিয়াসলি পড়া শুরু করলাম।

দুইটা কথার শেষ কথা হইলো যে ব্যক্তি রিফাত হাসানের সাথে কোন সম্পর্ক নাই আমার। কখনো দেখা হয় নাই। কথাও না। ফেসবুকের এলগরিদম আমাদের কাছাকাছি রাখে প্রতিনিয়ত ও একধরনের সম্পর্কেও এনে দাঁড় করায়ে দেয় ভারচুয়াল যোগাযোগের অভ্যাসবসতঃ।  তো, এই সূত্রে আমরা পরিচিত। সম্ভবত, এই পরিচয়ে ও সম্পর্কে রিফাত ভাই যখন বইটার ১০ বছর পূর্তি নিয়া লিখতে কইলেন, সাথে সাথেই রাজী হয়ে গেলাম। ব্যক্তিগত পরিচয় বা বন্ধুত্ব থাকলে পাঠ প্রতিক্রিয়ায় নির্মোহ থাকাটা কঠিনই আর কি! এই কঠিন কাজটা করতে হইতেছে না ভেবেই আনন্দচিত্তে শুরু করলাম।

বিসমিল্লাহ!

সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও রাজনীতি কে একটা জরুরি ভাব হিসেবে নিয়া এই বইটার সকল আলাপ অগ্রসর হইছে, যেখানে রিফাত হাসান ‘রাজনৈতিক ব্যক্তি’ এর একটা ডেফিনেশান দিলেন, যেটা পপুলার  ডেফিনেশান থেকে আলাদা হয়ে নতুন একটা মিনিং ক্রিয়েট করতে পেরেছে বইলা মনে হয় আমার কাছে।

আমার মনে হয় না এত নির্মোহ, নন্দনের চাপমুক্ত, আবেগকে দূরে সরায়ে রেখে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী যে ‘বাংলাদেশ’ তারে এর আগে এত প্রিসাইজলি এড্রেস করা হইছে।

কোরআনে নফসের যে স্তরে, নফস-ই লাওয়ামাহ অর্থাৎ যে মুহূর্তে আত্নার দাসত্ব থেকে মুক্তি ঘটে মানুষের, মানুষ বিবেক দিয়ে বিচার করতে স্বাধীন ও সার্বভৌম হয় ও এই বিশেষ অবস্থা সম্পর্কে মানুষ যখন সচেতন হয় তখন সে ‘রাজনৈতিক ব্যক্তি’ হয়ে ওঠে।

‘টেক্সট, কন্সপিরেসি ও রূপকথা’ বই তে মানুষের এই পলিটিক্যাল হওয়া নিয়ে অর্কের ( রায়ান আহমেদ অর্ক) প্রশ্নের জবাবে রিফাত ভাই বলতেছিলেন যে, মানুষের এই সার্বভৌমত্ব অর্জন করা সম্ভব। আমি দুইটা বই থেকে বারবার ‘রাজনৈতিক ব্যক্তি’, ‘সভারেনটি’, ‘সম্পর্ক’, ‘বন্ধুত্ব’ এই বিষয়গুলার ব্যাখ্যা বিভিন্নভাবে ঘুরেফিরে যেখানে যেভাবে এসেছে পড়তেছিলাম।  কিন্তু আফসোসের ব্যাপার হইলো যে, এই বিষয়গুলা নিয়া খুব ডিটেইল কাজ মেবি এখনো হয় নাই আমাদের দেশে। এই তৃষ্ণা নিয়েই ফরহাদ মজহারের বইটা পড়া শুরু করি।

ফরহাদ মজহার বলতেছেন, রাজনৈতিক হয়ে ওঠা মানে শত্রু মিত্র ভেদজ্ঞান। রাজনীতি আরম্ভ হয় বন্ধুত্ব দিয়ে। কোন আদর্শ দিয়ে নয় (ব্যক্তি বন্ধুত্ব ও সাহিত্য বই থেকে)। তবে, ফরহাদ মজহার গুরুত্ব দিতেছেন শত্রুকে চিহ্নিত করার মাধ্যমে রাজনীতি স্পষ্ট করায়, অন্যদিকে রিফাত হাসানের মূলকথা হইতেছে রাজনীতির শুরুটা হইতে হবে বন্ধুত্ব দিয়া। শত্রু চিহ্নিত করার মধ্যে যে বিপ্লবীপনা, একটা সংকীর্ণ বাম এপ্রোচ তার সম্পূর্ণ বিপরীত ও লিবারেল অবস্থানে থেকে রিফাত হাসান দুনিয়ার যে কোন সমস্যা রে মূলত দার্শনিক ও ধর্মীয় বলতেছেন এবং আরো স্পেসিফিকভাবে রিফাত হাসানের ‘রাজনৈতিক ব্যক্তি’ কোন দাস নয়,  সে সার্বভৌম। ইসলাম তারে এই খেলাফত দিতেছে। দাস শুধু আল্লাহরই হওয়া যায়। রাজনৈতিক মানুষের কাজ হইলো ব্যক্তির দাসত্বকে বিনাশ করে আল্লাহর দাসত্ব মানে বিবেকের বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠা করা।

সংক্ষেপে এই কথাগুলা বইলা নিলাম আলাপের সুবিধার কারনে ও যারা বইটা পড়েন নাই তারা যেন রিলেট করতে পারেন,  আলাপে ঢুকতে পারেন। কারন আমার কাছে মনে হইছে ২৩২ পেইজের এই বইটার মূল ফিলোসোফিক্যাল আলাপ এইটাই। এবং আরো আরো আলাপ হইতে পারে আসলে। নন মুসলিম বা একজন এথিস্ট তাহলে কীভাবে বিবেকপ্রাপ্ত হইতেছেন, রাজনৈতিক প্রাণী হয়ে উঠতেছেন? তার পলিটিক্যাল বা নফসে লাওয়ামাহ এর বিশেষ অবস্থায় সচেতন হয়ে ওঠায় ইসলাম বা কোরআন তো কোনো প্রভাবক না। তাইলে কী?

যে কোন ফিলোসফিক্যাল বইপত্র, লেখালেখি পড়তে গেলে পাঠকমাত্রই নিজের সাথে নিজের বোঝাপড়ার একটা জার্নির মধ্যে থাকে বইলা মনে হয়। বই পড়তে পড়তে আমার প্রশ্নটা ছিল, আমি কি তাইলে রাজনৈতিক মানুষ? বা আমার বন্ধু কি তাইলে রাজনৈতিক মানুষ? আমি যাদের চিনি তাদের মধ্যে কারা কারা রাজনৈতিক মানুষ? রাজনৈতিক মানুষ হয়ে উঠতে পারাটা কতোটুকু জরুরি?

তো আমার প্রশ্নগুলার উত্তর পাইতে থাকি রিফাত হাসানের রাষ্ট্রচিন্তায়।

রিফাত হাসান বলতেছেন, রাষ্ট্র একটা ধর্মব্যবস্থাই। সুযোগ পেলে আরো বিশুদ্ধ ধর্ম হয়ে ওঠার ট্রাই করে রাষ্ট্র। আর এর চূড়ান্ত স্তর হইলো ধর্মনিরপেক্ষতা। এইটারে বলতেছেন আগ্রাসী রাষ্ট্রের চূড়ান্ত ধর্মব্যবস্থা, যেখানে ধর্মকে রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে দূরে রেখে সেক্যুলার স্টেট বা ধর্মনিরপেক্ষতার নামে নিজেই ধর্ম হয়ে ওঠে, মহাশক্তিধর প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়। রাষ্ট্রের এই ধর্ম হয়ে ওঠারে ঠেকানো রাজনৈতিক ব্যক্তির কাজ। যেভাবে একদল রাজনৈতিক মানুষ মুসা(আঃ)-এর  সময়ে ফেরাউন ও তার কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রের ধর্ম ও ঈশ্বর হয়ে ওঠারে চ্যালেঞ্জ করেছিল মানুষের মুক্তির জন্য।

দিকে দিকে টোটালিটেরিয়ান রাষ্ট্রব্যবস্থার জয়জয়কার তো আমরা দেখতেই পাইতেছি। গণতান্ত্রিক ইউএসএ তে ছাত্র-শিক্ষকদের উপর চলমান  রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন অভাবনীয় ছিল কিছুদিন আগেও। এইটা তো এখন খুব স্পষ্ট যে সকল রাষ্ট্রই মহাক্ষমতাধর হয়ে উঠতে চাইতেছে। একটা ধর্ম হয়ে উঠতে চাইতেছে।

তো এই  রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কোন ইন্ডিভিজ্যুয়ালের পক্ষে কীভাবে ‘রাজনৈতিক ব্যক্তি’ হয়ে ওঠা সম্ভব? কীভাবে সভারেন হওয়া পসিবল?

ব্যক্তির সভেরনটি যেহেতু কাম্য, তো রাষ্ট্র যদি জনইচ্ছার কাছে নতি স্বীকার না করে এই কাম্য অর্জন তো সম্ভব না। রাষ্ট্রের বিলয় ছাড়া ব্যক্তির মুক্তি, সার্বভৌমত্ব সম্ভব না। তবে এই ইউটোপিয়ান ইচ্ছা সম্পর্কে রিফাত হাসান সজাগ থাকেন তাই বলতেছেন, একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি রাষ্ট্রকে বন্ধুত্বপূর্ণ করে তোলার লড়াইয়ে বরং সামিল হয়। তার লড়াই স্পষ্ট হয়। তার এই তৎপরতা হলো রাজনীতি। সম্পর্ক ও বন্ধুত্বের জ্ঞান।

রাষ্ট্র তাই যখন আইনের শাসনের কথা বলে, এই আইনের শাসন  আসলে বলপ্রয়োগের ক্ষমতা। ক্ষমতার খবরদারি ও দাপট। প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্রের দার্শনিকদের প্রজ্ঞার হাতে রাষ্ট্রপরিচালনার ভার দিতে চান তিনি। ন্যায়ের ভিত্তিতে যে শাসন।

আগেও বলেছি যে, এই বিষয়গুলা নিয়া আরও আরও আলাপ হওয়া দরকার। এই কারণে দরকার যে, আলাপের মাধ্যমে বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্বলতা কাটায়ে উঠতে পারব আমরা। প্রচলিত ন্যারেটিভের বাইরে এসে আমাদের প্রতিটা  ঐতিহাসিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নৃতাত্ত্বিক ঘটনাগুলারে নির্মোহ দৃষ্টিতে বিচার করা সম্ভবপর হবে। রাষ্ট্ররে বন্ধুত্বপূর্ণ বানাইতে গেলে এইগুলা লাগবে আমাদের।

যেমন, রাবীন্দ্রিক রাষ্ট্র।

আমার মনে হয় না এত নির্মোহ, নন্দনের চাপমুক্ত, আবেগকে দূরে সরায়ে রেখে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী যে ‘বাংলাদেশ’ তারে এর আগে এত প্রিসাইজলি এড্রেস করা হইছে।

মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতায় যেমন সাম্য, ন্যায় ও মানবিক মর্যাদার ভিত্তিতে বাংলাদেশ হবার কথা ছিল, কিন্তু আমরা পাইলাম একটা রাবীন্দ্রিক রাষ্ট্র। রাষ্ট্র নেই, আছে রবীন্দ্রসংগীত। আমার  সোনার বাংলা। একটা  রাষ্ট্র-কল্পনা। বিপ্লব বেহাত হয়ে গেলো। এই রাষ্ট্রের মিডিয়া ‘রবীন্দ্রমুগ্ধ মিডিয়া’ তাই। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের রবীন্দ্রগ্রহনের আরেক নাম বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ যা উপমহাদেশের ঐতিহাসিকভাবে সাম্প্রদায়িক, জাত-পাত-বর্ণবাদি ব্রাক্ষন্য সংস্কৃতির উত্তরাধিকার।

রিফাত হাসানের ‘রাবীন্দ্রিক রাষ্ট্র’ ধারনা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী পপুলিস্ট পলিটিক্যাল বয়ানকে সরাসরি প্রশ্ন করতে অনুপ্রাণিত করে, চিন্তা যোগায়, বাংলাদেশকে বুঝতে সাহায্য করে। যে বিপ্লব বেহাত হয়ে গেছে তারে ফিরায়ে আনতে করনীয় সম্পর্কে সজাগ করে। এবং এই রবীন্দ্রপনা প্রতিবছর উদযাপনের টাইমে রিফাত হাসানের রাবীন্দ্রিক রাষ্ট্র ধারনা প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে।

এইখানে একটা ছোট নোক্তা দিয়ে রাখি যে ‘সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও রাজনীতি’ এবং ‘টেক্সট, কন্সপিরেসি ও রূপকথা’ বই দুইটা যদিও নন-ফিকশন, কিন্তু পড়তে গিয়া ‘জল্লাদখানায় বইসা কবিতা পাঠ’ এর ফিল পাইবেন!

তারপরেও বইটারে আমি চিন্তার বই হিসেবেই দেখি। এমনিতেও আমাদের চিন্তা নিয়ে লেখালেখি, বইপত্র কম। ক্রিটিক্যালি দেখার, বোঝার মন ও চোখ তৈরি হবার ফুসরৎ নাই যাপিত জীবনে। শেখানো জাতীয়তাবাদী বয়ানে কথা বলাবলি, দেখাদেখির কানারহাটবাজারে আমাদের বসবাস। রাজনৈতিক ব্যক্তি হয়ে ওঠা ভীষণ দরকারি যখন, রাষ্ট্রকে ধর্ম হয়ে উঠতে না দেয়ার সংগ্রামে রত থাকার টাইমে এই ধরনের বই ও রিফাত হাসানের বহুল প্রচার কামনা করি বরং। 

এইখানে একটা ছোট নোক্তা দিয়ে রাখি যে ‘সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও রাজনীতি’ এবং ‘টেক্সট, কন্সপিরেসি ও রূপকথা’ বই দুইটা যদিও নন-ফিকশন, কিন্তু পড়তে গিয়া ‘জল্লাদখানায় বইসা কবিতা পাঠ’ এর ফিল পাইবেন!

কেন করি?

কারন বলার আগে একটা ছোট ঘটনা বলি। কিছুদিন আগে কবি ও বুদ্ধিজীবী ইমরুল হাসান এক স্ট্যাটাসে জানতে চাইছিলেন স্বাধীনতাউত্তর বাংলাদেশে চিন্তার বই কোনগুলা? ঐ স্ট্যাটাস  ফলো করতেছিলাম কে কোন বই এর কথা কয় দেখার জন্য। দেখা গেলো কোন চিন্তার বই এর নাম কেউ নিলেন না তেমনভাবে।  আমি  ‘সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও রাজনীতি’ এর নাম নিলাম কমেন্টে। ইমরুল ভাই রিপ্লাইয়ে  এই বইটা নিয়া তার বক্তব্যের একটা অডিউ শেয়ার দিলেন। প্রায় ১ ঘণ্টার অডিও। ঐ আলাপটা শুনতে শুনতে মনে হইছিল যে বিচ্ছিন্নভাবে এমন আলাপ আলোচনা হইলেও তার ইমপ্যাক্ট পড়ার মতন প্রচার, প্রসার হয়নাই। কিন্তু হওয়াটা জরুরি।

কারন আমাদের মুক্তি চাই। বাংলার মানুষ মুক্তি চায়!

মুক্তির পথে যে যে বয়ানগুলা সরাসরি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আছে তারে বুদ্ধিবৃত্তিক মোকাবেলা করার কোন বিকল্প নাই। তাই হয়তো এই বইয়ে তিনি বিচার ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলতেছেন। যুদ্ধাপরাধের বিচার, শাহবাগ, শাপলা নিয়া ইন ডেপথ কথা বার্তা বলতেছেন। মিডিয়ারে ক্রিটিক করতেছেন। কোন সিদ্ধান্ত বা সমাধানের কথা হয়তো বলতেছেন না, কিন্তু এই ক্রিটিক করাটা দশ বছর পর এসে বুঝতে পারতেছি আমরা যে খুব জরুরি ব্যাপার ছিল। বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ে রাজনৈতিক মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাইতেছে। সম্পর্ক, বন্ধুত্ব তৈয়ার হইতেছে। রাজনীতি স্পষ্ট হইতেছে। কে বন্ধু, কে শত্রু স্পষ্ট হইতেছে। এইগুলাই বিগত এক যুগের বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই এর ফলাফল। যার রসদ যুগিয়েছে এই ক্রিটিক্যাল চিন্তাগুলা যার মধ্যে আমি ‘সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও রাজনীতি’ ও টেক্সট কন্সপিরেসি ও রূপকথা বই দুইটাকে ও রিফাত হাসানের এক্টিভিজম ও বুদ্ধিজীবীতারে গুরুত্বের সাথে পাঠ করতে চাই।

আমরা রাষ্ট্ররে আমাদের বন্ধুত্বের মধ্যে আনতে চাই। চাই রাষ্ট্র আমাদের উপর নিপীড়কের  ভূমিকায় অবতীর্ণ না হোক। এইটাই রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে আমাদের চাওয়া; ফাইট, ও রাজনীতি।

নাশাদ ময়ুখ, লেখক।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.

Leave the first comment