রিফাত ভাই আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা জন্মদিনের। আমি জানি না কততম জন্মদিন, তবে সেটা তিরিশের জন্মদিন হোক এবং আপনি শত বছর বেচে থাকেন এই দোয়া আমি আল্লাহর কাছে করি আর কি। আপনাদের সাথে এবং রিফাত হাসানের সাথে আমার পরিচয় এক জায়গা থেকেই এবং একই সূত্রে এবং এটা স্যোশাল মিডিয়া থেকেই, ফেসবুক থেকে। এই সময়ের স্যোশাল মিডিয়া তো আমাদের জন্য আশির্বাদ, এই ব্যস্ত জীবনে। এবং শুধু স্যোশাল মিডিয়া থেকেই না, রিফাত হাসানের সাথে আমার পরিচয় সম্ভবত মানুষের প্রতি যে জুলুম, এই যে ভয়, এই যে ভীতিকর অবস্থা, এই যে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা, সেই বিষয়ে রিফাত হাসন যে অপিনিয়ন ডেভলপ করছেন, করেন, তিনি যে মতামত দেন, সে মতামত হয়ত আমাদের সাইলেন্টলি এক্সচেঞ্জ হয়। এখান থেকে রিফাত হাসানের সাথে পরিচয়। আমি চট্টগ্রামে ছিলাম, কয়েক বছর, তখন রিফাত হাসানের সাথে পরিচয় হয় নি। বাট স্যোশাল মিডিয়ায় পরিচয় হওয়ার পরে, চট্টগ্রামে দু-একবার রিফাত ভাইয়ের সাথে আমি বসেছি, কথা হইছে অনেক। তার বক্তব্য, বয়ান, বিতর্কের সাথে পরিচয় হয়েছে। বাংলাদেশে এই সময়ে ডেফিনেটলি রিফাত হাসান একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হয়ে থাকবেন। সেটা হয়তো আজকে মূল্যায়ন হবে না। কারণ আমরা যে একটা ভীতিকর কালো সময় পার করছি, সেক্ষেত্রে নিজের জীবন, নিজের সবকিছুকে তুচ্ছ করে নিজের সবকিছু ভুলে যে লেখক, যে সাহিত্যিক, যে চিন্তক বা যে দার্শনিক কথা বলেন, ইতিহাস তাকে স্মরণ করবেন। সেটা কতোটুকু স্মরণ করবে সেটা হয়ত আগামি দিনগুলাতে, সেটা ফুটে উঠবে অথবা উঠবে না। হয়ত তখন আমি থাকবো না বা আমরা অনেকেই থাকবো না। কিন্তু রিফাত হাসানের যে ভূমিকা, আমাদের তরুণদের জন্য, তার যে চিন্তা সেটাকে রিয়ালাইজ করা, সেটাকে ছড়িয়ে দেয়া, সেটাকে ধারণ করা, এটা খুব জরুরী।
দেখেন বাংলাদেশ, আগামি বাংলাদেশ, আমি খুব অন্ধকার দেখি অর্থনৈতিক পার্সপেক্টিভে। এন্ড ডেফিনেটলি এটা আমার জন্যে খুব কঠিন। আপনারা যারা এক্টিভিস্ট, আপনারা যারা ইউনিভার্সিটিতে পড়েন, আপনারা যারা সাহিত্য করেন, ডেফিনেটলি আপনারা হয়ত একটা এক্টিভিজমের ভিতর দিয়ে যান কিন্তু যেকোন রাষ্ট্রের বা যেকোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি অবিবেচক অনুযায়ী যদি হিউজ ঋণ করে এবং যদি মাল্টিপল বাজেট হয় মানে এক টাকার জায়গায় সে খরচ যদি পাঁচ টাকা হয় সেটার যে ইফেক্ট সে ইফেক্টটা আমাদের উপর পড়বে। আমি রাজনীতির এই জায়গা থেকে সব থেকে ভীত এ কারণে যে, আমার বৃদ্ধ বয়সে এ দেশের কী অবস্থা হবে, আমার সন্তানদের কী অবস্থা হবে, আপনাদের তারুণ্যের শেষ সীমায় এসে, আপনাদের বৃদ্ধ সময় কী হবে— বিকজ অফ আপনার-আমার উপরে ফিন্যানসিয়াল অর্থনৈতিক বার্ডেন খুব বাড়তেছে। আমি মনে করি, রিফাত ভাই এই বিষয়গুলো ফোকাস করবেন, এই চিন্তাগুলো করবেন, যে আমাদের, আপনি যখন ঋণ করে ঘি খাচ্ছেন, তখন আপনার নাদুসনুদুস চেহারা দেখে বুঝা যাবে না যে, এই ঋণ পরিশোধ করতে যেয়ে আপনি কীভাবে ভেঙে যাবেন। আমরা অলরেডি, আমরা অর্থনৈতিক একটা স্লাইড, মানে ধ্বসের দিকে যাচ্ছি, চলে যাচ্ছি আর কি। সেটা আপনারা যারা অর্থনৈতিক এনালাইসিস করেন, আরো ভালো বুঝবেন। এবং পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় আনরেস্ট, ইন্টারন্যাশনালি নানা রকম নেতিবাচক ভূমিকা, এটা আমাদেরকে খুব ক্ষতি করবে। এখানে কোন রাজনীতি নেই, এখানো কোন দল নেই, কোন ধর্ম নেই। রাষ্ট্রের অর্থনীতি যদি ক্ষতিগ্রস্থ হয়, তাহলে বেকার বাড়বে, পতিতা বাড়বে, পিতাহীন সন্তান বাড়বে, সবকিছু বাড়বে, সব খারাপ দিক বাড়বে।
আমি রিফাত হাসানের সাথে আত্মিকভাবে কানেক্টেড শুধু এইটা জায়গায়, যে মানুষের যে অধিকার লঙ্গিত হচ্ছে, মানুষের যে ভবিষ্যত সে, আমি মানুষের চোখে আলো দেখতে পাইনা, মানুষ কোন নিশ্চিত স্বপ্ন দেখতে পারে না। আমি যখন ঢাকার বাইরে যাই, আমি এ কথাটা বারবার বলি, ফেসবুকেও বলি, যে আমি যখন ঢাকার বাইরে যাই তখন খুব মানে একটা জলি মাইন্ড নিয়ে যাই, কিন্তু আমি যখন মানুষের সাদা চোখ দেখি , তাদের স্বপ্নহীন চোখ দেখি, ফেস দেখি, অপুষ্টি দেখি আমি প্রচণ্ড ব্যাথিত হই, ভেঙে পড়ি নিজের ভিতর। খুব খারাপ লাগে, আমি যখন ঢাকায় ফেরত আসি তখন সে দুঃস্বপ্ন হয়ে আমি চলে আসি। তো যাই হোক, রিফাত হাসান যেভাবে আমাদেরকে তার চিন্তা দিয়ে, আমাদেরকে, আমাদের চিন্তাকে পরিশুদ্ধ করছেন, আপনারা তরুণরা এই জায়গাটাতে ভাবেন, যে আগামির দিনে আমাদের পারষ্পরিক বন্ধুত্ব, পারষ্পরিক সম্পর্ক সুন্দরভাবে বেঁচে থাকা, সে জায়গাটার জন্য আমাদের মনে হয় এই চিন্তাটাকে আরো বেশী প্রাকটিস করা দরকার। আরো বেশী আমাদেরকে বন্ডিং করা দরকার। এবং যদিও আমাদের মুরাদ ভাই এটা বলছেন, বাট আমি খুবই এটা নিয়ে অরিড যে, বাংলাদেশ ফিন্যানসিয়ালি এবং অর্থনৈতিকভাবে কোন দিকে যাচ্ছে আর কি। এবং আপনারা একটু চিন্তা করলে আপনার নিজেরাও অরিড হবেন। এসব সমসাময়িক যে টুকটাক বিষয়গুলা আছে এগুলা আপনাদেরকে খুব বেশী ইফেক্ট করবে না, বিকজ অফ আমাদের ঋণের বার্ডেন বাড়তেছে এবং খরচগুলা হচ্ছে মাল্টিপল আকারে এবং সব ঋণ সুদ আকারে আমাদেরকে শোধ করতে হবে। আমাদের জনগনের ট্যাক্সের টাকা নিয়ে করতে হবে। তো যাই হোক, আজকের এই দিনটা অবশ্যই আমার জন্যে খুবই স্মরণীয় হয়ে থাকবে, আমি এই প্রতিষ্টানটা চিনি, এটা প্রতিষ্টানে আমি সম্ভবত ছয় বা সাত সালে পার্শ্ববর্তী মেডেট লিজিং এ অডিট করতে আসতাম, তখন দুপুরে লাঞ্চ করতে আসতাম এই অফিসে। এই অফিসে দুতলাতে খুব অল্পদামে লাঞ্চ পাওয়া যায়। সো এখানে আশে পাশে কোন ভালো হোটেল না থাকার কারণে আমি এই অফিসটাতে এসে প্রতিদিন লাঞ্চ করতাম। আমার টিমসহ আর কি। সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের আজকের এই উদ্যোগটা অবশ্যই ঐতিহাসিক হবে। এবং আপনাদের চিন্তা আরো শাণিত হবে।
রিফাত ভাই তার চিন্তা আমাদের ভিতরে নির্ভয়ে, নিরাপদে আরো বেশী ছড়িয়ে দিবেন। একটা সুস্থ, সুন্দর জীবন আমাদেরকে একটা রৌদ্রকোজ্জ্বল, একটা ভীতিহীন আগামীতে আমাদেরকে উপহার দেয়ার ক্ষেত্রে তিনি অবদান রাখবেন। আমি যাবতীয় এসব আশা রেখে রিফাত ভাইয়ের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করে আমার বক্তব্য শেষ করছি।
আমিনুল ইসলাম, পেশায় চার্টার্ড একাউন্টেন্ট।