রিফাত হাসানকে আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে এনগেইজ করি মূলত। মানে, গত, আমরা গত এক দশকে এমন একটা পরিক্রমার ভিতর দিয়ে পার হয়েছি, রিফাত হাসানই তা ভালো বলতে পারবেন। ধরেন, ব্লগের পছন্দের কবি থেকে জামাত কিংবা এটা ওটা ইত্যাদি যে লেভেল, এই ট্যাগগুলাকে পাত্তা না দেয়ার শক্তিটা দুই হাজার একুশ সালে এসে, একুশ-বাইশে এসে আপনারা ঠিক এইটাকে বুঝতে পারবেন না যে, এইটা দুই হাজার চোদ্দতে কী-রকম ভয়াবহ ছিলো। অন্যরকম একটা পরিস্থিতি ছিলো।
এবং আপনারা যারা ব্লগে বলেন, কিংবা লেখালেখির মহলে বলেন, একে অন্যকে বন্ধু কি বন্ধুস্থানীয় ভাবতেন। তো তারা কোন নৈতিক প্রশ্ন ছাড়া একে অন্যকে ধ্বংস করে দেবার জন্য, সেটা শারীরিক হোক, তার চিন্তাজগত হোক তাকে ধরিয়ে দেবার, মানে, যাস্ট কোনরকমের নৈতিক এক একটা ডিলেমা তো ফেস করবে মানুষ।
তো, ঐ শুরুর সময়ে আমি রিফাত হাসানকে অবিচল দেখেছি এবং আমি নিজে তখন আমি ঐভাবে ইয়া ছিলাম না, আমি অতোটা ম্যাচিউরড তো ছিলামই না এবং আমার ঠিক ঐ জায়গাটা নিয়ে ঠিক ২০১৩ র মানে হেফাজতের ঐ হামলার আগ পর্যন্ত আমার অবস্থান আসলে পপুলার অবস্থানের, ব্লগীয় পপুলার অবস্থানের দিকেই ছিলো। তো এবং আমার আসলে সেটাও ছিলো মূলত পিয়ার প্রেসার থেকে।
তো, রিফাত হাসান এই পিয়ার প্রেসারটাকে কিন্তু কোনভাবেই ইয়ে করেন নাই। সাহসিকতা বা কিংবা এটা অন্য জায়গা, বাট, এই দূরদর্শীতা রিফাত হাসানের এটা অন্যরকম। এটা অন্য একটা ভ্যালু এড করে।
তো, যদিও এটা, কিছুটা, মানে রিফাত হাসানের প্রতি একটা অবিচার, বিশেষ করে তার কবিত্বকে, এরকম অনেক হয়েছে, আমাকে একজন বলেছে, রিফাত হাসানের কবিতা ভালো লাগে, তো বলছে, কিন্তু উনি তো শিবির করে, জামাতের লোক। তো, এবং যে বলছে, সে চট্টগ্রামেরই এক ছেলে এবং রিফাত হাসান কবি নন, এর কারণ হচ্ছে গিয়ে তিনি অমুক, তিনি তমুক।
তো, এ ব্যাপারগুলা, আমি কিন্তু তখন রিফাত হাসানের সাথে ঐভাবে কানেক্টেডও না, তখন। যখন আমি, এই ব্যাপারগুলো ঘটছে কিংবা শুনছি আমি। তো, এটা কিছু আঞ্চলিকতাদুষ্ট অবজার্বেশনও হতে পারে হয়তো, তারপরও, রিফাত হাসানের এই যে চিন্তার যে সজীবতা, তার যে রীচ, এটা কিন্তু আমার কাছে মনে হয় যে, মোটা দাগে আমাদের, মানে, অনলাইন ন্যাটিজেন বলতে পারি, সেই জায়গায় নাই, বাট, আঞ্চলিক উনার শহরের যে সেক্যুলার, যেই অংশ, ইনাদের একটা অপোজ ইয়ে ছিলো, এবং এটা ভয়াবহ। কারণ তারা তো ফিজিক্যাল ট্র্যাস করতে পারছেন, কোথায় থাকছেন।
আমি রিফাত হাসানকে এই জায়গা থেকে, মাঝে মাঝে আমার মনে হয় যে, একটা ঝুকিঁপূর্ণ অবস্থানও যে, আপনি আপনার নিজের শহরে কিছু মানুষ, যারা আসলেই বিশ্বাস করছেন, আপনি তাদের জন্য বলেন, কিংবা দেশের জন্য বলেন, ক্ষতিকর টাইপ কিছু। সেখানে থাকা এবং সেটাকে মাথায় রেখে নিজের চিন্তার যে স্বাধীনতা, সেটাকে অক্ষুন্ন রাখা আসলেই চ্যালেঞ্জ।
এবং একটা কথা বলা, আমরা যারা চিন্তা করি, তাদের জন্য, তর্ক বিতর্কে থাকি, তাদের জন্য এটা বলা আসলে বাহুল্য যে, আমি একমত কিংবা একমত নই। আমাদের প্রতি জায়গায়ই প্রত্যেকের মতামত থাকবে।
তবে, চিন্তাহীনতার এ সময়ে চিন্তার জগতটা আসলে নিঃসঙ্গ এবং এই নিঃসঙ্গ জগতে আপনি যখন চিন্তার এ ব্যাপারটার মধ্যে থাকবেন, আমার কাছে, আমি ব্যাক্তিগতভাবে, আমি রিফাত হাসানকে ফিল করি যে, না, এই জগতে আমার আত্মীয় কেউ আছেন।
তো, রিফাত হাসান শতায়ু হোন। অনেক শুভেচ্ছা তাকে। অনেক ভালো থাকুন।
ফারুক আব্দুল্লাহ, লেখক ও সমাজ বিশ্লেষক।