The Sheep. – Salvador Dali – USA Inspired by his stays with Caresse Crosby at Hampton Manor Do cows really inspire sheep?
এটি যেহেতু রূপকথাবিশেষ, এই লেখার পাত্রপাত্রিদের নাম রূপকথা থেকেই নেওয়া, বাস্তবে কেউ এমন থেকে থাকলেও তাদেরকে কাল্পনিক ধইরা নিতে হবে। যেমন রিফাত হাসান।
সেই সকালে মোহনগঞ্জের একটি রিকসার উপর একটি শহুরে কাকপক্ষি বইসা আছে। হাহঃ, একটি কাকপক্ষি?
এইভাবে শুরু হল-
কাকপক্ষিটির তিরিয়ে তিরিয়ে চা খাবার অভ্যাস। তার ডায়েরি।
মোহনগঞ্জের ভোর
টাকাগুলো কবে পাবো? সামনের শীতে?
আসন্ন গ্রীস্মে নয়?
আমার তিরিয়ে তিরিয়ে চা খাবার অভ্যাস।
তারপরে, হঠাৎ চায়ের কাপটা খালি হয়ে গেলে, নশ্বর চায়ের জন্য একটু বিষাদ।
গল্প বা উপন্যাস পড়ার সময়েও। জমিয়ে জমিয়ে, আস্তে আস্তে পড়ি। জীবন তো ছোটই, নশ্বরও, কিন্তু তারে তিরিয়ে তিরিয়ে পড়া, এক কাপ চায়ের মত।
যখন বছর শেষ হল, তার সম্পর্কে সচেতন হবার পরের মুহূর্তটাও একই রকম। একটি বিষাদের আমলকি সময়ের ভেতরে গড়িয়ে গড়িয়ে ঢুকে পড়ে, অল্প কিছুক্ষণের জন্য। ভ্রম হয়, আহা, চা বা উপন্যাসের মত সময়টারেও যদি সেভাবে তিরিয়ে তিরিয়ে ধরা যেত!
তবে এই জানুয়ারিতে, কুয়াশা ও মেঘ একটা পুরো আস্ত দিন ঢেকে থাকে। দিনের বেলাতেও মাথার ওপরে টুপি লাগিয়ে হাঁটতে হয়, না বৃষ্টি না কুয়াশার ফোটা অস্বস্থি তৈরী করে। এ বছরটি ঠিক গত বছরের মত নয়, হওয়ারও নয়, সময়টিও অল্প বিস্তর মান্না দের সেই গানের মত বিভ্রান্তিকর, পৌষের কাছাকাছি রোদমাখা সেই দিন।
আজ পহেলা জানুয়ারি, লিখতে বসলাম। কিন্তু কাহিনী। কাহিনী মানেই বিগত দিনের আলাপ। বা রূপকথা।
২.
আমি রূপকথা পছন্দ করি। রূপকথা কিনি। খাই।
বাস্তব গালগপ্প যেমন আখতারুজ্জামান ইলিয়াসে আমার তেমন স্বস্থি নেই।
মোহনগঞ্জের কুয়াশা
লেখক রিফাত হাসান সেদিন ঢাকা আইসা জ্যামে আটকে গেল। অনেক্ষণ। কী হল?
প্রেসিডেন্ট যায়, রিকসাওয়ালার নিরুত্তাপ উত্তর।
যেন মামুলি কেউকেটা। এই পথে অরুণ, বরুণ, পৃথ্বিলা বা সকিনাসুন্দরীর মতোই প্রতিদিন যায়। বা মোহাম্মদ আব্দুল গওস। করিম রহিম বা শাহানা, এরকম প্রত্যন্ত লোক। কত লোক যায়! তবে এই লোকের বৈশিষ্ট্য হল একটু জ্যাম হয়। জ্যাম, বড়জোড় পুলিশের হুইসেল বা ধুলোবালির ঝামেলার বাইরে, প্রধানমন্ত্রী: এই বস্তুখানার অন্য কোন প্রতিমূর্তি, ভাবাই যায় না এই লোকের চেহারায়।
দীর্ঘক্ষণ পরে, জ্যাম ছুটতে শুরু করলে, রিকসাওয়ালা বেল বাজিয়ে দিল, টুংটুংট্রুং। মানে, টাইম নাই।
আমি পরে মনে হতে, হাসতে হাসতে, লোকটারে জিগাব, কিন্তু আবার জ্যামে।
হল না। মনে হল, নাহ। বরং আমারই অবসর। বুদ্ধিজীবী ও রিকসাওয়ালা, কে চিন্তা করবে? মহামতি সক্রেটিস কারে এই দায়িত্ব দিতেন? রিপাবলিকে রিকসাওয়ালারা কোন শ্রেণীতে পড়ত? দাস?
ধুলো ও ট্রাফিক পেরিয়ে, যেতে যেতে, হাহঃ, কী মহিরুহ প্রেসিডেন্ট আমাদের, যেন রূপকথা। যখন টিভি খুলে বসি, বা পত্রিকার লাল অক্ষর। যেন বা হাতি, বিশাল শুঁড়, আমাজন জঙ্গলের, বা অজগর, এনিম্যাল প্লানেটের বিশাল জুম করা, হা এর ভেতরে, বা উটপাখি, বা টুইনটাওয়ার।
ধরা যাক, রিকসাওয়ালার নাম বারাক ওবামা, বা ওসামা বিন লাদেন বা মোহাম্মদ মনু মিয়া। অথবা হোক রিফাত হাসান। বুদ্ধিজীবীদের নামে নাম হলে, যেমন সৈয়দ আবদুল মকসুস, বা শেখ পৃথ্বিলা বেগম কি রিকসাওয়ালাদের নাম হতে পারে, প্রেসিডেন্টের নামে নাম, বা বরুণা মুখোপাধ্যায়? অসম্ভব নয়, তবে প্রত্যন্ত গ্রামে, এবং শেখ না। মেয়েরা গাড়ি চালায় শহরে, আর শ্রমজীবীরা রিকসা, সবখানে। শ্রমজীবীদের নারীপুরুষের ভেদ নেই।
আমি ভাবতেছিলাম, এই মি. বারাক ওবামার কাছে কোন প্রেসিডেন্ট নেই?
থাকলে কোথায়?
২.
মিডিয়া রূপকথা তৈরী করে। তার নৈতিকতাও। এবং আমরা কৌতুক।
আমার কৌতুক ভাল লাগে। মিডিয়া, রূপকথা ও কৌতুকের রাজনীতি পাঠ করতে থাকি।
মোহনগঞ্জের রূপকথা
বারাক ওবামা সাহেব এই জাগায় খিস্তি দিয়ে উঠলেন।
আমার মনে হল, তার প্রেসিডেন্ট নেই। অন্তত আমাদের মতো কোন প্রেসিডেন্ট।
আমরা টিভি ও মিডিয়ার খাদক। খাদকদের যে প্রেসিডেন্ট, তারে উপেক্ষা করা যায় না। ভয় করতে হয়।
ড্রয়িংরুমের নাস্তার মতো প্রেসিডেন্টকে আমরা পাউরুটির সাথে খাই।
আর ভয় পাই। আর চা। আর মহিরুহ প্রেসিডেন্ট। সমিহ করি।
আর প্যান্থারের বিজ্ঞাপন। আর প্রাণ চনাচুর। আর র্যাবের ক্রসফায়ার। আইনশৃঙ্খলার সৌন্দর্য। গণতন্ত্র, ভায়েরা আমার। চিৎকার করছে টিভি বা প্রথম ভালোর লাল অক্ষর, আর আপনি আবেগ ও আতঙ্কে থরোথরো, ড্রয়িংরুমে বইসা, কান চেপে ধইরা এক কোণে কাঁপছেন। যেহেতু মিডিয়া। রূপকথা তৈরী করে আর ভয়। আর নৈতিকতা।
২.
ধরুন, এই ড্রয়িং রুম এবং মিডিয়াগুলো একদিন বোমায় উড়ে গেল।
৩.
এইটারে আপনি ক্রাইম হিশেবে দেখতে পারেন। মিডিয়ায় বোমা মারার কথা বলায় বুদ্ধিজীবীদের আপনারা নিন্দা করেন যেহেতু। আমিও নিন্দার্হই বলি। সেই নিন্দা বজায় থাকুক।
এবং আসুন, পাড়ার টং-এ বইসা আলাপ করি। যেহেতু ড্রয়িংরুম নেই। শুধু ঘর আছে। অথবা ঘর কি আছে?
না থাকলেও সমস্যা নেই। আমাদের ভাবনা প্রেসিডেন্টকে নিয়ে।
যখন ড্রয়িংরুমও নেই, মিডিয়াও নেই, তখন এই প্রেসিডেন্ট বস্তুটি কোথায় এক্সিস্ট করবে?
বোমায় যদি প্রেসিডেন্ট ধারণাটি হাপিশ হয়ে গিয়ে থাকেন, তাইলে তো হলই। কিন্তু ধরুন, তিনি আছেন, যেহেতু থাকেন সাধারণত। তখন, রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে প্রেসিডেন্টের সাথেই ঠোকর লাগবে রিকসাওয়ালা বারাক ওবামা সাহেবের।
পথ ঘুরতে ঘুরতে বারাক ওবামা সাহেবের আবার খিস্তি। নাহ, তার এই নাম চেঞ্জ করতে হবে।
তবে তার আগেই সে আমারে নামিয়ে দিল।
আচ্ছা, বোমাতে কারে সন্দেহ করা যায়? রিকসাওয়ালা ওসামা বিন লাদেন?
মোহনগঞ্জের চাঁদ
এমন চাঁদের আলো, যদি মরি সেও ভাল, সেও মোর স্বর্গ সমান
কাহিনী জটিল হয়ে যাচ্ছে। ওবামা? হয়তো তার পক্ষে সম্ভবই নয় বোমা মারা।
ওবামা সাহেবের বোমায় সম্পৃক্ততা নিয়ে কন্সপিরেসি করা যেতে পারে। ওবামা নাকি ওসামা? নাহ, এক্ষেত্রে ওসামা হিরো। নাম তার ওসামা হলে মানানসই। ফিকশনে সাধারণত লাদেনই বোমাবাজ হন।
কন্সপিরেসি চলুক। তার জন্য গোয়েন্দারা আছেন।
ততোক্ষণ আমরা ওবামা সাহেব এখন কী করছেন দেখি।
দেখা গেল, ওসামা সাহেব (বা ওবামা) শেখ মুজিব হয়ে ওঠলেন। বঙ্গবন্ধু। ৭ মার্চ, ১৯৭১। অগ্নিকণ্ঠ, ভায়েরা আমার।-
আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সবাই জানেন এবং বুঝেন। আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়। ..
ওসামার কণ্ঠটি অবিকল শেখ মুজিবুর রহমানের মত। পুরো মাঠ গমগম করছে।
তখন এত টিভি চ্যানেল, মিডিয়া কিছুই নেই। তবু কয়েক লাখ লোক ওসামার সামনে। অবশ্যই, ওসামার এইসব লাগে না। মিডিয়ার থোড়াই কেয়ার করে। পুলিশে নীল হয়ে আছে রেসকোর্স মাঠ। সেনাবাহিনীর লোকজন ট্যাংকার সহ টহলে। ওসামা গলা ফুলিয়ে বলে চলছেন:
কী পেলাম আমরা? জামার পয়সা দিয়ে অস্ত্র কিনেছি বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য, আজ সেই অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আমার দেশের গরীব-দুঃখী নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে, তার বুকের উপর হচ্ছে গুলি।
ওসামা হুঙ্কার দিলেন:
আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোকদের হত্যা করা হয়, তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল,- প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে, এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সব কিছু, আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে। আমরা ভাতে মারবো, আমরা পানিতে মারবো। তোমরা আমার ভাই, তোমরা ব্যারাকে থাকো, কেউ তোমাদের কিছু বলবে না। কিন্তু আর আমার বুকের উপর গুলি চালাবার চেষ্টা করো না। সাত কোটি মানুষের দাবায়ে রাখতে পারবা না।
ওসামার ঘোষণা মাঠে আনন্দের হুল্লোড় তুলল:
এই সাতদিন হরতালে যে সমস্ত শ্রমিক ভাইরা যোগদান করেছেন, প্রত্যেকটা শিল্পের মালিক তাদের বেতন পৌঁছায়ে দেবেন। সরকারি কর্মচারীদের বলি, আমি যা বলি তা মানতে হবে। যে পর্যন্ত আমার এই দেশের মুক্তি না হবে খাজনা-ট্যাক্স বন্ধ করে দেওয়া হলো, কেউ দেবো না।
ওসামা হুঙ্কার দিল:
আমি পরিষ্কার অক্ষরে বলে দিবার চাই যে, আজ থেকে এই বাংলাদেশে কোর্ট-কাচারি, আদালত-ফৌজদারি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। গরীবের যাতে কষ্ট না হয়, যাতে আমার মানুষ কষ্ট না করে, সে জন্য সমস্ত অন্যান্য জিনিসগুলো আছে সেগুলির হরতাল কাল থেকে চলবে না। রিকশা, গরুর গাড়ি চলবে, রেল চলবে, লঞ্চ চলবে; শুধু সেক্রেটারিয়েট, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, জজকোর্ট, সেমিগভর্নমেন্ট দপ্তরগুলো. ওয়াপদা কোন কিছু চলবে না।..
হাঃহাঃ। রূপকথা?
নাহ। এ ঢের কল্পনা বিশেষ, প্রথমত ওবামা সাহেব মঞ্চে উঠে প্রথমে খিস্তি দেবেন। বোমা বরং সহজ-সম্ভাব্য।
দ্বিতীয়ত, এখন এমন সময়, শেখ মুজিবের এই ভাষণ বাস্তবের কেউ দিলে তারে গ্রেফতার করা হবে। এবং রিমাণ্ডে নিয়ে তিনশচুষট্টি গুঁড়ো হাড্ডি।
তবে আমরা কি এখন থেকে মি. বারাক ওবামা বা ওসামাকে মোহন দাশ করমচাঁদ বন্ধু বা শেখ আব্দুল বাসেত বইলাও সম্বোধন করবো মাঝে মাঝে?
বৈদ্যনাথ তলা বা অব গ্রামাটোলজি
মোহনগঞ্জে আবার কুয়াশা..
এবার রূপকথায় ফিরে আসি।
মি. বারাক ওবামা বা মোহনবন্ধু আমাদের ছাইড়া চলে গেছিলেন, কিন্তু তার ছায়া রাইখা।
তারে আবার খুঁজে বাইর করবার দায়িত্ব পড়ছে মিডিয়াকর্মীদের। যেহেতু বোমায় সন্দেহভাজন। সাংবাদিক ও গোয়েন্দাবন্ধুরা তৎপর হয়ে উঠেছেন।
বারাক ওবামা সাহেবের গত বছরের দুঃখগুলো কী কী হতে পারে?
গত বছরে মিডিয়ার সামনে হাজির হওয়াটা তার জন্য একটা দুঃখ বিশেষ।
যখন প্রথম তাকে মিডিয়ার সামনে আনা হল। তার বুকে সাইনবোর্ডসহ ফটোসেশনের জন্য দাঁড় করানো হল। সাইনবোর্ডে লেখা: মি. বারাক ওবামা ওরফে ওসামা বিন লাদেন ওরফে মোহন দাশ করমচাঁদ বন্ধু (৪০)। শিরোনাম: বোমা হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে জেহাদি সরঞ্জামসহ বারাক ওসামা মোহনবন্ধু গ্রেফতার।
র্যাটের মহাপরিচালকের প্রেসব্রিফিং এর সময়ে সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে ধরল।
আপনার নাম?
মোহাম্মদ আব্দুল বাসেত।
আপনার তো অনেক নাম।
খী? (খিস্তি)
ভদ্রভাবে কথা বলেন। আমরা মিডিয়া।
ধুহ। ( আবার খিস্তি)
এইবার সাংবাদিকগণ বিরক্ত হয়ে তার কাছ থেকে সরে গেলেন। সরাসরি র্যাটের মহাপরিচালকের কাছে প্রশ্ন করলেন: এই দেশ বিরোধী সমাজের শান্তি নষ্টকারী বেআদব সাংবাদিক অবমাননাকারী জঙ্গি বারাক ওসামা ওরফে মোহনবন্ধুর বিরুদ্ধে আপনাদের অভিযোগগুলো কী?
মহাপরিচালক: প্রথম অভিযোগ, উনি বোমাহামলাকারী।
সাংবাদিক: উনি কোথায় বোমা হামলা করেছেন?
মহাপরিচালক: আমরা এখনো বলতে পারি না। কিন্তু আমাদের কাছে শক্ত তথ্য আছে। একটি বোমা হামলা হইছে বা হবে। সেই হামলায় প্রেসিডেন্ট ও ড্রয়িংরুম উড়িয়ে দিয়েছেন, বা উড়বেন। তিনি বিদ্রোহের আহ্বান জানাচ্ছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাষণ দিচ্ছিলেন। ভাষণটা পুরো জঙ্গি ও দেশবিরোধী। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি।
সাংবাদিক: এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট মহোদয় কি অবগত আছেন?
মহাপরিচালক: হাঁ, তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ীই আমরা এই মোহন দাশ করমচাঁদ বন্ধুকে গ্রেফতার করেছি। যেহেতু গ্রেফতার হইছেন, আদালত তিনশচুষট্টি দিনের রিমাণ্ড দিছেন। তথ্য বেরুবেই। তখন আপনারা জানতে পারেন।
এইবার ক্যামেরা সরাসরি সাংবাদিক বন্ধুটির চেহারায় জুম। তিনি উত্তেজিত।
অর্ডার অব থিংস
:সুপ্রিয় দর্শকশ্রোতা, এই দুর্ধর্ষ সমাজবিরোধী মোহনবন্ধুকে গ্রেফতার অভিযানের পুরো ভিডিওটি আমাদের হাতে এসে পৌঁছুবে কিছুক্ষণের মধ্যেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভিডিওটি আমাদেরকে সম্প্রচারের জন্য হস্তান্তর করার কথা জানিয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি একজন লেখকই প্রথম মোহনবন্ধুর ব্যাপারে জনসমক্ষে কিছু বলে, এবং তাকে গ্রেফতার করার মাধ্যমেই এই সমাজবিরোধীর ঠিকানা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পায়। গোয়েন্দা বিভাগ থেকে প্রাপ্ত সেই রিমান্ডের ভিডিওটি ইতোমধ্যেই আমাদের হাতে পৌঁছেছে। গ্রেফতার অভিযানটি দেখার আগে আপনাদেরকে সেই রিমান্ডের ভিডিও ক্লিপটি দেখতে নিয়ে যাব। সাথে থাকুন।
যে ভিডিওচিত্রটি মিডিয়াতে আসল, তাতে একজন লেখকের চেহারা প্রথমে দেখা গেল, বয়স ত্রিশোর্ধ।
লেখক রিফাত হাসানের চেহারার সাথে তার কিছু মিল আছে।
রিমান্ডে নেওয়ার অল্প কয়েক ঘন্টার রিমান্ডের মধ্যে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঠিকানা বা চেহারার কথাই বইলা দিলেন গোয়েন্দাদের। বললেন, এই চেহারাটি তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের ভিডিওর স্মৃতি থেকে বলছেন। এই তথ্য পাওয়ার পরে অবশ্যই গোয়েন্দারা বিরোধী দল নিয়ন্ত্রিত ইন্টারনেট থেকে (যেটি এখানে নিষিদ্ধ, কল্পনা) বঙ্গবন্ধুর সেই সাত মার্চের ভাষণ ডাউনলোড কইরা লেখকের বর্ণনার সাথে মিলিয়ে নিলেন। এবং আঁতকে উঠলেন। তারপরে হাজার হাজার পুলিশ ছুটল মোহনবন্ধুকে গ্রেফতার করতে।
দি বার্থ অব প্রিজন
গল্পের একটা ধৈর্য্য থাকতে হয়। কিন্তু রূপকথা? আপনারা জানেন তো, আমাদের প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসেন।
১৯৭৫ সালে সপরিবারে নিহত বঙ্গবন্ধু সে রাতেই উত্থিত হলেন। এবং প্রেসিডেন্টকে ভর্ৎসনা করলেন।
এবং প্রেসিডেন্ট লজ্জিত হয়ে আইসা মোহনবন্ধুরে ছাইড়া দেবার নির্দেশ দিলেন।
আর্কিওলজি অব নলেজ
হাঃহাঃ।
সেই থেকে লেখক রিফাত হাসানের এখনো রিমান্ডমুক্তি ঘটে নাই।
রিমান্ডের ঘরে বইসা বইসাই তিনি লেখেন: এই বছরটি আপনার কেমন যাবে? এই সময়টি আপনি কীভাবে উদযাপন করবেন?
এর মধ্যেই খবর পাওয়া গেল, মোহন দাশ করমচাঁদ বন্ধু ওরফে বারাক ওবামা ওরফে লাদেন এখন মিডিয়ার গ্রাহক হয়েছেন। তিনি সরকার থেকে একটি ড্রয়িংরুম সমেত বাড়ি পেয়েছেন, যেহেতু মোহনবন্ধু। তবে তারে সতর্ক করে দেওয়া হইছে, নো মোর ভাষণ।
প্রতিদিন সকাল শুরু হয় তার ড্রয়িং রুমে বইসা টিভি দেখতে দেখতে। আর মিডিয়ায় সাক্ষাৎকারের খই। তিনি এখন এইসবে বেশ পটু।
ড্রয়িংরুমের নাস্তার মতো প্রেসিডেন্টকে তিনিও পাউরুটির সাথে খান।
আর ভয় পান। আর চা। আর মহিরুহ প্রেসিডেন্ট। সমিহ করেন।