১.
পুলিশ যখন নারী পেটায়, তখন এইটা কি জেন্ডার ইস্যু?
কারণ পুলিশ তো পুরুষকেও পেটায়, মারে, গুলি করে।
২.
জেন্ডার ইস্যু এখানে একটা সম্ভাবনা। এইটা অনেক সময় ক্রিয়েটিভিটির বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। বা ধরুন, গণতন্ত্র বা অপরাপর জরুরি প্রশ্নগুলোকে আড়াল করে, স্রেফ একটা সিওডো একাডেমিক আলোচনার বিষয়ে রিডিয়ুস হয়। শেষমেষ একটা এনজিওবাদি প্রজেক্টে শেষ হয়। খারাপ ভালর প্রশ্ন নয়। কিন্তু ধরুন, আপনি যখন সম্ভ্রমের প্রশ্ন করবেন, এইটা নিশ্চিতভাবেই একটা জেন্ডার ইস্যু। কারণ সম্ভ্রম আমাদের এখানে সামাজিকভাবে নারীত্বের প্রশ্নের সাথে উত্থাপিত হয়।
কিন্তু পুলিশ যখন কারো গণতন্ত্রহরণের উদ্দেশ্যে রাজপথে নারীকে পেটায়, এইটা কি সম্ভ্রমের ইস্যু? যারা জেন্ডার নিয়ে উৎসাহী, তাদের অনেকেই সম্ভ্রম প্রশ্নটিরে ক্রিটিক্যালি দেখে থাকেন বা আরোপিত মনে করেন। আমি সেদিকে যাচ্ছি না। সম্ভ্রম প্রশ্নটিকে আমাদের সোসাইটিতে নারীর অচ্ছেদ্য বিষয় হিশেবেও যদি দেখেন, প্রশ্ন হল, সম্ভ্রম বা আর কোন কোন নারীত্বের কম্পোনেন্ট এখানে অপদস্থ হয়, যা সে নারী না হলে পুলিশ করতো না। সব পেটানোতেই কি সম্ভ্রম হাজির থাকে? তখন বাদ বাকি আলোচনার স্পেসগুলোরে কীভাবে জায়গা দেবেন?
বা ধরুন, জেন্ডার প্রশ্নটি কি অরাজনৈতিক? মানে, আমাদের জেন্ডারজীবীদের আলোচনা শুনে মনে হয়, এইটা চরমভাবে অরাজনৈতিক বা ক্লীব ব্যাপার, এর সাথে অপরাপর রাজনৈতিক আলাপগুলোরে জড়িত করলে খোদ জেন্ডার প্রশ্নেরই সম্ভ্রম নষ্ট হবে। তাই কি?
৩.
কিন্তু পুলিশি ব্যবস্থা বা পুলিশি রাষ্ট্র জেন্ডারসংবেদি না হলে কী চমৎকার নীরবতার ব্যাপার। নাকি, আপনি নাগরিক নিগ্রহের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার পক্ষে?
৪.
অথবা পুলিশ কি একটা পুরুষ ব্যাপার? বা রাষ্ট্র, যেমন শেখ হাসিনা? আর নাগরিকরা নারী?
৫.
অতঃপর ধরুন, সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায়ের প্রতিবাদে হরিণাকুণ্ডু গ্রামের মা-মেয়েদের ঝাড়ু মিছিল। আর পুলিশ তাতে বেপরওয়া হামলা করে তাদের গুরুতর আহত ও নিহত করে। এইটা কি জেন্ডার ইস্যু? অথবা যখন নারী শ্রমিকদের উপরে পুলিশের হামলা হয়। তখন জেন্ডার প্রশ্ন কই থাকে? নাকি গ্রাম বা শ্রমিক জেন্ডার প্রশ্নে বিবেচ্য নয়?