রিফাত হাসানের ‘টেক্সট, কন্সপিরেসি ও রূপকথা’ হাতে পাইলাম। প্রডাকশন খুব সুন্দর, হাতে নিতেও ভাল্লাগে।
ভেতরের কন্টেন্ট অবশ্য এখনও পড়ে উঠতে পারি নাই। সূচীপত্র দেখার বাইরে পড়া বলতে এখন পর্যন্ত ২৭ পৃষ্ঠা পড়ে মোটামুটি এমন মনে হইলো:
বইয়ের শুরুর লম্বা ইন্টারভিউটা আরেকটু সুসম্পাদিত হইতে পারতো। জানিনা, লেখকের পার্স্পেক্টিভ হয়তো ভিন্ন; হয়তো আলাপের আনসেন্সর্ড ১টা ভার্শন রাখার কথা ভাবছেন। কিন্তু ‘হুম, ‘হচ্ছে’, ‘হইলো’ ইয়া, কথা হচ্ছে’ ‘মানে’, ইত্যাদি ম্যানারিজম বা অনেক বাক্যের ক্ষেত্রে, বাহুল্য বা রিপিটিশন যা সরাসরি বা ভিডিওতে চোখে ততটা লাগে না কিন্তু ছাপার অক্ষরে পড়তে গেলে লাগে৷ তাছাড়া ম্যানারিজমের উপস্থিতি এক্সট্রা কোনো ভ্যালুও এ্যাড করে না। এইটা শুধু ১ম ইন্টারভিউটার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এছাড়া না পড়েই বইয়ের কন্টেন্টের ব্যাপারে কিছু অনুমান করতে পারি।
কবি মাইকেন রবিন্স-এর ১টা লাইন আছে, I tell the content to fuck the form. ফর্ম নিয়া রিফাত হাসানের দৃষ্টিভঙ্গি মূলত এই লাইনের মতো। অন্তত ‘ সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও রাজনীতি’ এবং ‘ এই সময়টি আপনি কীভাবে উদযাপন করবেন’ পড়ে এমনটা মনে হইছিল। তার একই বইয়ের মধ্যে নানান ফর্ম ও মেজাজের প্রবন্ধ-নিবন্ধ, গল্প, কবিতা, ও ইন্টারভিউ পর্যন্ত থাকে।
লেখক হিসেবে তারে মূলত ২টা কারণে আমার ইন্ট্রেস্টিং লাগে।
১.
ভিন্ন ভিন্ন পলিটিক্স ও আইডিওলজির লোকেরা, ভিন্ন ভিন্ন কারণে ( যা আবার প্রায়শই ১টার সাথে R১টা কন্ট্রাডিক্ট করে!) তার চিন্তা ও ইন্টেলেকচুয়াল পলিটিক্সরে সমস্যাজনক মনে করে।
২.
রিফাত হাসান খুব গুছায়ে ননফিকশন লেখেন।
বাংলায় কেন জানি না, ননফিকশন অর্থাৎ প্রবন্ধ, নিবন্ধ ইত্যাদি অনাদরের জিনিস। মেসেজ, বা আর্গুমেন্টে নজর দিলেও গদ্যের দিকে বুদ্ধিজীবীরা খুব একটা নজর দেন না মনে হয়। (ব্যতিক্রম আছে, কিন্তু এক্সেপশন ইজ নো ল।) রিফাত হাসানের গদ্যে চারুতা থাকে, সবসময় যত্মের ছাপ থাকে।
আমি মূলত আরামখোর পাঠক। ননফিকশনে আমার পছন্দের কম্বিনেশন হচ্ছে গদ্য সুখপাঠ্য হবে আবার একইসাথে ইন্সাইটও থাকবে। ‘সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও রাজনীতি’-তে তেমন কম্বিনেশন পেয়ে ভাল্লাগছিলো।
আশা করি, এই বইয়ের লেখাগুলা পড়েও তেমন ভাল্লাগা জারি থাকবে।
হ্যাপি রিডিং।
কে এম এ রাকিব, লেখক।