Author: রিফাত হাসান
Blogs
ঋষি-ভারত
রোদে ভিটামিন থাকে, শীর্ষেন্দুর উপন্যাসের লাইন। আমার মজাই লাগত এক সময়। এখন তেমন পড়া হয় না। সেই শীর্ষেন্দুও নাকি এখন তেমন পড়তে পারেন না। বয়স তো হয়েছে। শুধু লেখেন। ভাবেন। বক্তৃতা দেন, সেদিন বললেন। ইদানীং চট্টগ্রামে প্রায়ই আসেন ওঁরা। মানে, ওপারের লোকজন। আমার ভালই লাগে। সৌভাগ্য বটে আমাদের। তো, কয়েকদিন আগে, ভদ্রলোককেও পাওয়ার সৌভাগ্য হল। বাতিঘরে আসছিলেন শীর্ষেন্দু। তাঁর পরিমিত ব্যক্তিত্বে আমি মুগ্ধ। ভাষায় ও ভাবে পুরোপুরি ঋষি একজন। লেখায়ও বটে। আমি লেখালেখিতে শীর্ষেন্দুর এই ঋষি ভাবটির ভক্ত। তাঁর কথাবার্তায়ও এই ভাবটি পেলাম। ভারতীয় লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। ভারতীয়? নাকি কলকাত্তাই? অবশ্যই ওঁরা যখন বলেন, তখন মনে হয় ওঁরা এর কোনটাই…
Blogs
মাটির ময়না ও তারেক মাসুদের লড়াই
এইভাবে আনু, রোকন, রুহুল, আরিফ, কাজী সাহেব, এবং মৌলভীদের মুখে যে ভাষা এবং বাংলাদেশ বিপ্লবে দ্বিধায় ও সংগ্রামে, বেড়ে ওঠার ইতিহাসে তাদের যে অংশ, তার সাহস তুলে ধরে তারেক বাংলাদেশ রাষ্ট্রের উপর তাদের নৈতিক অধিকার তৈরি করেন। এই ভাষা, এই অধিকার, অনুচ্চারিত কথা প্রগতিশীলদের পরিচিত না, শুধু তাই নয়, তারা পরিচিত হতে চায়ও না, বরং এক বর্ণবাদী আক্রোশে তাদের লড়াই চলে এই অধিকারের বিরুদ্ধে ফুল পাখি লতা পাতার নামে। এই বর্ণবাদের বিরুদ্ধেই তারেক মাসুদের লড়াই। তারেকের এই লড়াই ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ বা সংকীর্ণ ‘দেশপ্রেম’-এর লড়াই নয়, যেভাবে অনেকেই তারেককে নির্মাণ করার চেষ্টা করেন। তারেকের ভাষায়, এটি হল ‘বাঙালি মুসলমান’-এর লড়াই।
Blogs, গল্প
পাখি
আম্মার রুম থেকে হঠাৎ মেধার খুশি শোনা গেল। পাখি! পাখি!! দেখ না! কোন ফাঁকে মেধা ঘুম থেকে ওঠে ওই দিকে চলে গেছে। আমার দু বছর বয়সি কন্যা। আমিও ওই রুমে গেলাম। পাখিটা নির্জীব। ততক্ষণে একটা চিকন দড়িতে পা বাঁধা হয়ে গেছে। পাখিটা ছটফট করছে না। কী হলো কে জানে। দড়িটা জানালার গ্রিলে বাঁধা। পাখিটারে খাবার দেওয়া হয়েছে। বাটিতে করে চাল। মেধা আগ্রহ নিয়ে দেখছে। চোখে খুশির তারা। পাখির কোন আগ্রহ নেই। পাখিটা নির্জীব বসে।
Blogs
সাম্যবাদী রিকশা, নাগরিকতা, ফিলিস্তিন ও অন্যান্য
রিকশায় যাচ্ছিলাম আমি আর মাসুদ। রিকশাওয়ালা স্বগতোক্তির মতো কইলো, মোটর যায় যায়। সেজন্য আস্তে চলে। আমি বললাম, আল্লা আল্লা কইরা আর কদিন চালাও। তারপরে তো আর লাগবে না। সে কইলো, ক্যান? বললাম, সরকার নিষিদ্ধ করছে তো মোটর রিকশা। জানো না? সে কইলো, ধুর, কীয়ের নিষিদ্ধ। এইটা কি খেলা নি। জিন্দেগিতে নিষিদ্ধ হইবো না দেইখেন। আমি বললাম, এইটা হাইকোর্টের রায়। সে কইলো, কোর্ট-ফোর্ট কী হইছে, এই দেশে সব কিছু টাকা দিয়ে বদলানো যায়। আমি কইলাম, এইটা হাইকোর্ট তো। সে কইলো, আপিল হইছে।
Blogs
কবিতা নিয়া
এই আলাপগুলোর শিরোনাম দিলাম: কবিতা নিয়া। কিন্তু আসলেই কি কবিতা নিয়া? বলা মুশকিল। যাদের সাথে আলাপ, তারা কেউ কেউ কবি, স্বনামধন্যও। আবার অকবিও আছেন। কিন্তু বোঝা যায়, তারা কবিতা পছন্দ করেন বা পড়েন বা সমালোচক। যারা কবি, তাদের অনেকেই কবিতারে একটা নির্ভেজাল দুনিয়া নাম দিয়া হাজির করেন, যাতে অন্য যে কোন আলাপ নিষিদ্ধ। তাহাদের এই কবিতার হেরেমে আমি পাঠক, সমালোচক বা কখনো কখনো কবি হিশেবেও উঁকি দেবার গর্হিত চেষ্টা করেছি। এই আলাপগুলো সেই উঁকি-ঝুঁকির বয়ান। এই আলাপ আরো চলবে, হয়তো বহুদিন। কারণ একটা বোঝাপড়ার ভেতর দিয়ে না গেলে তো কবিতা, সাহিত্য, লেখালেখি, জীবন সবই অনর্থ। এই পুনঃহাজিরাতে বিরক্ত যারা, তাদের…
Blogs
কবিতা, রাঙ্গালুর পেটিস পাঠ ও এক ঝাঁকি আম
১. বিকেলটা রণজিৎ দাশের জন্য কেমন, বলা মুশকিল। পরে ভদ্রলোক কফি খাচ্ছিলেন। কয়েকজন স্থানীয় কবিসমেত। খুব হাশিখুশি। আমি ভাবার চেষ্টা করছিলাম। কবির কবিতা পাঠ শেষে একজন মাদ্রাসার হুজুর বা মাদ্রাসার ছাত্র ভরা মজলিসে কবিকে প্রশ্ন করেছেন, তিনি প্রত্যহ রোজনামচা লেখেন। তার রোজনামচার ভাষা কী হবে? এইটা লেখার জন্য কি তাঁকে দাশহুজুরের মত ডিকশনারির শব্দ ব্যবহার করতে হবে? একটু পরামর্শ দয়া করে। প্রশ্নের সারাংশটি এরকমই। নিতান্তই সরল প্রশ্ন, একজন গুণীজনের প্রতি। হয়তো ভাবলেন একজন কবির পরামর্শ বেশ কামেল হবে। আগেকার দিনে তো কবিদেরকে তেমনই ভাবা হত। বিদ্যান, গুণি, সর্ববিষয়ের পণ্ডিত। কবিগণ আগেকার দিনে মসনভি লিখতেন। মানতেকুত তায়ের। মহাভারত লিখতেন। মেঘদূত…