fbpx

The
Rifat Hasan
Website

রিফাত হাসানের
অফিসিয়াল সাইট

Debates, পাঠ প্রতিক্রিয়া, সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও রাজনীতি

ইমরুল হাসান

রিফাত হাসানের ‘সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও রাজনীতি’ বাংলাদেশের একটা সময়ের চিন্তার ডকুমেন্টেশন

April 2, 2024   0 comments   2:23 pm
ইমরুল হাসান

রিফাত হাসানের বইটা, ইটস্ আ গুড রিডিং। এটার একটা কারণ হচ্ছে যে হি হ্যাজ আ সিমপ্যাথেটিক টোন। উনি যে কথাটা বলছেন, উনি একটা এনগেজমেন্টের জায়গা থেকে, একটা দরদের জায়গা থেকে এই কথাগুলি বলছেন।

Share

ইমরুল হাসানের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত বুক রিভিউ ট্রান্সক্রাইবড ভার্শন। ট্রান্সক্রিপশন: ওয়াজিহা তাহাজ্জুদ মেধা।

সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও রাজনীতি, বইটা পাবলিশ হইছিল ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। আমি পাইছিলাম আগস্ট মাসে। তো, পাওয়ার পরে যা হইলো, অল্প কিছু তো চোখ বুলানো হইছিল। এবং ঘটনা হইতেছে যে, বেশিরভাগ লেখাই তো আসলে বিভিন্ন ফর্মে, ফোরামে দেখা হইছিল, যার ফলে বইটা আসলে পড়ি পড়ি করে আর পড়া হয় নাই। বা অইভাবে তো আসলে পড়া আছেই— এরকমই একটা ধারণা ছিল যে, ওনার লেখাপত্র তো পড়ি, পড়ছি বা জানি, এইরকম…। তো ঘটনা হইতেছে যে, কন্টেম্পরারি ক্রিয়েটিভ রাইটিংস, ধরেন আপনার গল্প, উপন্যাস, কবিতা নিয়ে কথা বলা যতটা সহজ বা প্লিজেন্ট ব্যাপার, চিন্তার বইগুলা নিয়ে কথা বলা আরেকটু ঝামেলার। 

ঝামেলার বেশ কয়েকটা জায়গায়, যে, ধরেন একটা হচ্ছে পারসোনালি পরিচয় থাকলে তো এক ধরনের ইগোর ব্যাপার থাকে। পজেটিভ নেগেটিভ দুই অর্থেই। মানে, ধরেন (কেউ) আপনার বন্ধু মানুষ, আপনার তারে প্রশংসা কইরাই ইগো স্যাটিসফাই করতে হবে। বা হচ্ছে যে, তারে একটু ক্রিটিকালি দেখার নাম কইরা তারে দুই তিনটা পিঞ্চ মারতে হবে। এরকম কিছু ঝামেলা থাইকা যায়। অ্যাজ আ হিউম্যান আমাদের তো আসলে এই ব্যাপারগুলো আছে। আবার ধরেন চিন্তার জায়গাগুলো থেকে দেখতে গেলে ফুল্লি অবজেকটিভ কোন রিডিং তো পজিবল না। মানে যেকোন জায়গাতেই তো আসলে কনটেক্টচুয়াল রিডিং হয়। কনটেম্পরারি জায়গা নিয়া বলতে গেলে, রিলেশনটাও আসলে ইনক্লুড থাকে;  তো, এইটা সব সময় আসলে পজিটিভ ঘটনা না যে, আমি মানুষটারেও চিনি এবং তার চিন্তাটাকেও জানি; এক্ষেত্রে হয় কি, অনেক সময় ওভারলেপিং হয়ে যায়। যেমন একটা কাহিনি আছে না যে, অন্ধকার ঘরে হাতিটারে দেখতেছে তো কেউ শুঁড় ধইরা বলতেছে এইটা পাইপের মতন, পা ধইরা বলতেছে — এইরকম কন্টেম্পরারি জায়গাটা অন্ধকার না হইলেও এইটা ধরেন অনেক বেশি লাগানো। মানে খুব মাইক্রোস্কোপে দেখতে গেলে যেটা হয় যে জিনিসটা আছে সেটা তো আসলে ওরকম নাই। ডিসটেন্স হইলে আমার ধারণা দেখাদেখিটা একটু বেটার হয় আরকি। চিন্তার কাজটাও তো হইতেছে আসলে আগে যা দেখছেন বা পাস্টের ঘটনা যে একটা ঘটনা ঘটছে, দেন আমি এটা নিয়ে কথা বলতেছি, এইরকম। সুতরাং কন্টেম্পরারি হইলেই এই একটা ঝামেলা থাইকা যায়। 

সেকেন্ড ঘটনা হইতেছে যে আবার ধরেন, যিনি রাইটার তিনি লেখালেখিতো আসলে শেষ করেন নাই। যিনি বাঁইচা আছেন, লিখতেছেন, অনেক পজিশন তো চেঞ্জও হয় তার; সে তো একজন ডেড-রাইটার না। যার ফলে যিনি বাঁইচা আছেন, লিখতেছেন, কথা বলতেছেন তার সাথে একধরনের ডিলিংস হইতে পারে; এন্ড-এনালাইসিস বলে কোন কিছু হয়না আর কি। তো, ওই জায়গাটাও আছে।

এই জিনিসগুলি আগে বইলা নেয়াটা একটু ভালো, তাইলে হচ্ছে আমার ধারণা কথার যে ইন্টারপ্রিটটেশনগুলি সেগুলি হয়তো একটু ক্লিয়ার হইতে পারে। মানে, গ্রাউন্ডটা একটু ক্লিয়ার করে রাখা ভাল। 

তো, রিফাত হাসানের এই বইটা আসলে কন্টেম্পরারি ইস্যুগুলা নিয়ে, যে ইস্যুগুলারে তিনি এনকাউন্টার করসেন। তো, উনি কিভাবে এনকাউন্টার করসেন, কোন জায়গা থেকে এনকাউন্টার করছেন – এই জায়গাগুলি নিয়ে আসলে কথা বলতেছেন। বইটার মধ্যে ছয়টা সেকশন আসে, ছয়টা সেকশনে ৩৮ টা লিখা আছে এবং ৩৮টা লেখার মধ্যে সবগুলো লিখাই ২০০৮ থেকে ২০১৩র মধ্যে। একটা জিনিস খেয়াল করলাম যে এখানে উনার ২০১২ সালের কোন লেখা নাই। সবচেয়ে বেশি লেখা আছে আসলে এখানে ২০১০ এর দশটা ২০১৩ সালের ৮ টা… এরকম টাইমলাইনের ঘটনা। 

তখন ব্লগে ঘটনাগুলি ঘটতেছে, তারপর রাষ্ট্র ব্যবস্থা নিয়ে, এক এগারো, ইসলামের ঘটনাগুলা, আইন, বিচার, সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধ এই ইস্যুগুলি উনার আছে, বইয়ের সাবজেক্ট হিসেবে। পড়তে গিয়ে যে জিনিসটা আমার মনে হয়েছে, একদম প্রথমেই স্ট্রাইক করছে যে জায়গাটা, সেটা হইতেছে যে উনি প্রবলেমগুলির ডিফেন্ড করতে যাচ্ছেন এটা বলাটা একটু বেশি হবে, কিন্তু প্রবলেমগুলিরে উনি হচ্ছে আসলে দেখতে চাইতেছেন, এর নানান জায়গাগুলি নিয়ে উনি হইতেছে বলতেছেন। কিন্তু মুশকিল টা হইতেছে এখানে উনার কিন্তু কোন একটা প্রজেক্ট বা ধরেন একটা ওয়ে আউট – এই জায়গাটা নাই। 

যেমন ধরেন বলা হইতেছে আসলে আমরা শাহবাগরে কেমনে দেখব, বা রাষ্ট্র ব্যাবস্থাটা কেমনে দেখব, বা আইনটারে কেমনে দেখব, বা মুক্তিযুদ্ধরে আমরা কেমনে দেখব; তো, ধরেন এই দেখাদেখিগুলা হইল; বেশিরভাগ লেখারই শেষটা আসলে হইছে যে আমাদেরকে এই জিনিসটাও এই ঘটনাতে কন্সিডার করা উচিত; এই জায়গাটাও আমাদের দেখা উচিত বা পার্সপেক্টিভটারে আসলে বাদ দিয়া যাওয়া হইতেসে। তো, তখন যেটা হইসে ইস্যু নিয়ে যখন আলাপ হইতেসে, তখন যারা আলাপ করতেছেন, আমার ধারনা উনার একটা ইন্সাইট পাইতেছেন; কিন্তু ঘটনাটারে যারা লং-রানে দেখবেন, মানে আজ থেকে ধরেন ২০-২৫ বছর পরে যখন ইস্যুটার রিলিভেন্সগুলি কমে যাবে; কিন্তু ওই ইস্যুরে ফেইস করে যে আলাপগুলি হইছিল সে আলাপগুলির তো আসলে একধরনের কন্টিনিউশন থাকে, যেমন ধরেন ব্লগের নীতিমালা নিয়ে কিছু লেখা আছে, এখন ব্লগ ব্যাপারটাই তো ডেড, কিন্তু তাই বইলা ব্লগের আলাপগুলি তো আর ডেড না; ব্লগের আলাপের জায়গাটা শিফ্ট হয়ে আসছে হচ্ছে যে ধরেন ফেইসবুকের অ্যালগরিদম কিভাবে কাজ করতেসে। তো এখানে যদি আপনি কোনো সলিউশনের, মানে সলিউশন বলাটাও আসলে বেশি বলা হবে, মানে আপনি যদি কোনো একটা ওয়ে আউট/ওয়ে ফরওয়ার্ড-এর জায়গাটাকে ডিফাইন না করেন তাইলে প্রবলেম ইটসেল্ফ এটাকে হচ্ছে অ্যানালাইজ করাটা একটা হাফ-ডান ওয়ার্ক হিসেবে থাকে। 

আমার কাছে একটা একটা মেজর অবজারভেশন মনে হইসে যে উনি জাইগাগুলিতে আমরা কোন জাইগা থেকে দেখব, কীভাবে দেখব এই ব্যাপারে উনার কিছু সাজেশন আছে, কিছু ইনসাইট আছে; কিন্তু ঠিকাছে আমি সবকিছুই দেখলাম; দেন, উনি এর পরের জায়গাটাতে আর যান নাই। যাইতে হবে – এটা তো আর জরুরি নাহ, কিন্তু এই না যাওয়াটাও চোখে পড়ছে। মানে, মনে হইতেছে যেন ক্রিটিকাল থাকতে হবে, এই ক্রিটিকাল থাকাটার মানে একটা ঘটনাতে তো আমরা আর একটা পজিশনে নিয়ে নিতে পারিনা!  

যেমন ধরেন শাহবাগের ব্যাপারে, হেফাজতের ব্যাপারে। এইসব জাইগাতে হইছে কী, সবাই কুইক একটা পজিশন নিয়ে নিতে চাইতেছে। মানে উনার ওই কনভারসেশনগুলির মধ্যেও দুই-একজন ফ্রেন্ডের সাথে উনার কনভারসেশন আছে বা উনি যে জায়গাটাকে এনকাউন্টার করতেছেন, যাদেরকে এনকাউন্টার করতেছেন তারা হইতেছে যে এগার টু টেইক এ পজিশন, যে এই সাবজেক্ট টা, আমি কী পজিশন নিব?  এখনো দেখবেন যে বেশিরভাগ সময় যেকোনো ইস্যুতে আমরা খুব অ্যাওয়্যার থাকি, আমরা কী এটার পক্ষে যাব না বিপক্ষে যাব? পক্ষে গেলে লাভ হবে না বিপক্ষে গেলে? বা ধরেন একটা জিনিস নিয়ে বেশি মাতামাতি হইতেছে এইটার বিপক্ষে তো আমাকে দুইটা কথা বলতেই হবে।

তো, এইযে জায়গাটা, যে একটা পজিশন নিয়ে নিতে হবে – এর এগেইন্সট-এ হচ্ছে একটা জায়গাকে ক্রিটিকালি দেখতে পাইতে হবে। এ জায়গাটা রিফাত হাসানের তো অবশ্যই স্ট্রং একটা জায়গা; কিনতু দেন এগেইন, হইতেছে যে, আপনি কোনো পজিশন নিতে চাইতেছেন না, সেটাতো আসলে একটা পজিশন হিসেবে আর আমরা ধইরা রাখতে পারি না। এইযে পজিশন নিতেছি না, সেটা তখনই জাস্টিফাইড হতে পারে যখন আপনি কোনো একটা ফিইউচার পজিশনকে এটলিস্ট ভিজুওয়ালাইজ করতে পারতেছেন বা একটা জায়গাতে আপনি বলতে পারতেছেন যে, এই জাইগাগুলিতে হচ্ছে গিয়ে আমরা একটা পজিশন নিতে পারব। মানে কোনো পজিশন না নিতে পারাটা একসময় একটা সেক্সি ঘটনা ছিল, কিন্তু এখন আসলে বেশ মনোটানাস ব্যাপার হয়ে গেছে। তো রিফাত হাসান যখন লিখছেন  ওই সময়ে আমার মনে হয় যে এটা একটা ভালো ঘটনা ছিল আরকি, মানে ক্রিটিকাল হইতে পারাটা।

তো লেখাগুলোতে আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে যে উনি যখনই জিনিসগুলি লিখছেন, তখনই কোনো না কোনো ঘটনারে সেন্টার করে লিখছেন। যে ব্লগে একটা ঘটনা হইছে, এরকম একটা, আদালতের রায় হইছে, এরকম একটা ঘটনা ঘটছে, তো দেন এইটার পার্সপেক্টিভে হচ্ছে উনি উনার চিন্তাটাকে বলতেছেন। এতে করে হইছে কী, আমার ধারনা অনেকসময় কনটেক্সট’টা মিসিং না হয়ে গেলেও এখনকার সময়ে গিয়ে, আজকে ১০-১২ বছর পরে আইসা হইতেছে অনেকসময় ঝাপসা হয়ে গেছে। যে কোনটার বেসিসে কথা বলা হয়তেছে। মানে, ঘটনাটারে সেন্টার করাটা ভুল জিনিস হয় নাই, ইট’স ওকে। আমার মনে হয় যে এইভাবে আমরা কথা বলতে পারি। মানে, আগে যেমন হইতো যে ধরেন আইডিয়ারে বেইজ কইরা কথা বলা, যে একটা শ্বাশত, সবসময়ের একটা ব্যাপার আছে, সেটা নিয়ে সমাজ, সভ্যতা, রাষ্ট্র এগুলি নিয়ে কথা বলতে হবে। মানে এই জিনিসগুলি আছে, তবে এটা বেইজ হিসেবে নাই উনার। উনি হইতেছে যে ঘটনাটারে বেইজ করে ওই আইডিয়াগুলারে এক্সপ্লোর করার ট্রাই করছেন। তো এখন হইতেছে কী, ঘটনাগুলি তো এখন পাস্ট হয়ে যাচ্ছে, সরে যাইতেছে। কিন্তু যে জায়গাগুলিকে উনি এনকাউন্টার করতেছেন ওই জায়গাগুলি তো থাকতেছে। তো ওই কথাগুলি কিন্তু মিনিং তৈরি করতেছে হইতেছে যে ওই ঘটনার কনটেক্সট’টাতে। তো ঘটনাটারে যখন সরাই নিতেসে, তখন কথাগুলিও কিন্তু আসলে একটু দুরে সরে যাইতেছে বা বলা যায় যে এইটার যে বেইজ’টা ছিল সেটা ডিসলোকেট হয়ে যাইতেছে।

মানে এখন আবার নতুন একটা ঘটনার বেইজ করে দেখা যাবে আবার একই কথা বলা লাগতেছে। তো, যে কারনে, এখনকার সময়ে যারা পড়বে, মানে আমি যদি নাইনটিজ এর ঘটনা নিয়ে বেইজ কইরা বলি, এখন এরপরের যারা মানুষ, মানে ঘটনাগুলি অতোটা উনাদের জন্য পরিচিত ব্যাপার না, এতোটা উনাদের মেমোরিতে নাই, সাইকোলোজিতে নাই, ইভেন ইন হিস্ট্রি এই জিনিসগুলি যখন ব্লার হয়ে গেছে, তখন ওই কথাগুলির মিনিং তৈরি করাটা একটু কঠিন কাজ হবে। তো ফর্ম হিসিবে আমি বলতেছি না যে এইটা খারাপ ফর্ম হইছে, কিন্তু এইটার একটা ডিজএডভেনটেইজ এখানে আছে।

তো এসব জায়গা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে উনি তো আসলে অনেক ইস্যুস নিয়ে আসছেন। ওই ইস্যুগুলিতে আসলে যেমন কিছু জায়গা এগ্রি করি আমি, তেমন আমার কিছু ডিজএগ্রিমেন্টও আছে। এই জায়গাগুলির দুই-একটা জায়গা হাইলাইট করে বলা যায়। 

যেমন হচ্ছে – মুক্তিযুদ্ধ; ওই পজিশনগুলি উনি পরবর্তীতে আরো রিভিউ করছেন কিনা আমি শিওর না, কিন্তু বইয়ে যেভাবে আছে, সেটা কিছুটা প্রবলেমেটিকই। প্রবলেমেটিক ইন আ সেন্স যে, ধরেন এক তো হইতেছে বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে হিস্ট্রি আমাদেরকে খাওয়ানো হয়, সেটা তো আসলে ঠিক না, যা আমরা বুঝতেই পারি। কিন্তু এর এগেইনস্টে, যেমন ধরেন আহমদ ছফাদেরই ছিল, তারপর আরো অন্য অনেকেরই কথা আছে হইতেছে যে, না এটা একটা বিপ্লব ছিল, এই বিপ্লব আসলে ধরে রাখা যায় নাই। উনার কিছু কমেন্ট আছে যে (পেইজ নাম্বারটা এক্স্যাক্টলি মনে নাই) “মুক্তিযুদ্ধের একটা লক্ষ্য ছিল হচ্ছে আসলে ব্রাহ্মণবাদকে পরাজিত করা”; বা হইতেছে যে “আমরা মুক্তিযুদ্ধকে ঠিকমত বুঝতে পারি নাই”, এরকমের কিছু জায়গা। তো এই জায়গাগুলি আমার মনে হয় যে ফারদার আরো ক্রিটিকাল হওয়ার সময়ে আমরা চলে আসছি। 

মুক্তিযুদ্ধ অল অফ আ সাডেন যে আসলে হয় নাই, বা কী কারনে পাকিস্তান রাষ্ট্রের ফেইলিউরগুলি হইছিল এবং কিভাবে বাংলাদেশ এমার্জ করছিল এবং এই এমার্জের পেছনে যে হিস্ট্রিকাল রিজনগুলা, এগুলাকে আমার মনে হইতেছে যে একটা গ্লোরিফাই করার একটা ব্যাপার আছে। ধরেন এখানে লেখার মধ্যে বেশ কয়েকটা জায়গায় আসছে যে এর (মুক্তিযুদ্ধের) ফোর্স হিসেবে উনি দেখতেছেন যে হচ্ছে পলিটিকাল এলিট এবং ইন্টেলেকচুয়াল এলিটদেরকে। কিন্তু পিয়াস করিমের একটা কথা ছিল যে বাংলাদেশ হওয়ার পর মেইন ক্রাইসিস হয়ে গেছিল একটা মিলিটারি এলিট এবং পলিটিকাল এলিটদের মধ্যে। ইন্টেলেকচুয়াল এলিটদের তেমন একটা রোল ছিল বইলা আমার মনে হয়না।

যেমন ধরেন ঘটনাটা ঘটতেছিল কি, এখনকার ওই কোটা-আন্দোলন দিয়ে বুঝতে পারবেন, যে বাংলাদেশে যারা ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট ছিল উনাদের তো আসলে চাকরি-বাকরি পাইতে ঝামেলা হইতেছিল। মানে গভার্নমেন্ট জব যা তৈরি হয় সব আসলে পশ্চিম পাকিস্তানের লোকজন নিয়ে যাইতেছিল। এবং মিলিটারিতেও এ সমস্যাগুলি ছিল আরকি। আপনি দেখবেন যে যারা বাঙালি জাতীয়তাবাদের লোক আমরা বলি, যেমন আলতাফ মাহমুদ, উনি কিন্তু করাচিতে গিয়ে উনার ক্যারিয়ার করার চেষ্টা করসেন। কিন্তু করাচিতে উনি আসলে ওইভাবে জায়গা করে নিতে পারেন নাই, পরে উনি ঢাকাতে ফেরত আসেন। আলমগীর কবিরের কথা যদি বলেন, উনি কিন্তু আসলে ইংল্যান্ড থেকে পড়াশুনা কইরা তারপর বাংলাদেশে চলে আসছেন। আইসা হচ্ছে উনারা যখন ঢাকাকে একটা সেন্টার করতে যাইতেছেন, তখন হচ্ছে উনারা আসলে দেখছেন যে না, এই বাঙালি জাতীয়তাবাদ তো আমাদের আসলে কাজের জিনিস। তো সুতরাং এভাবে উনারা একটা নেরেটিভ পরবর্তীতে সাজাইছেন। কিন্তু বাঙালি জাতীয়তাবাদের জায়গা থেকে যেটা বলা হয় যে ইসলামকে পরাজিত করে বাংলাদেশ তৈরি হয় নাই, একই ভাবে আবার হইতেছে যে ধরেন কোনো ব্রাহ্মণবাদকে পরাজিত করার জন্যও আসলে বাংলাদেশের তৈরি হয় নাই। যখন মুক্তিযুদ্ধটা ছড়ায় গেসে তখন আসলে বাংলাদেশের মানুষের সামনে আর কোনো উপায় ছিল না। এই জায়গাগুলিকে আরো ক্রিটিকালি বা আরেকটু ভালোভাবে আমাদের দেখতে পারাটা উচিত।

মুক্তিযুদ্ধ তো আসলে চাপায় দেয়ার ঘটনা ছিল। যদি পাকিস্তানি মিলিটারি ফোর্সটাকে এ্যাপ্লাই না করতো, ইট ইস লেস লাইকলি যে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে জড়াইতো। অবশ্যই আমরা বিশাল একটা সায়ত্ত্ব-শাসন নিয়ে বাইর হয়ে আসতাম, বাংলাদেশ রাষ্ট্রও তৈরি হতো না। তার মানে এই না যে কোনো একটা বিপ্লবের স্বপ্নের জন্য এটা হইছিল। মুক্তিযুদ্ধ যদি আরো লেংদিয়ার হইত তাইলে অন্য আরো অনেক এরিয়া ওপেন হইত এখানে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের কাঠামো হিসেবে যদি বলা হয়, যে এটা একটা বিপ্লব ছিল, ব্রাহ্মণ্যবাদকে পরাজিত করার জন্য ছিল, ইসলামকে পরাজিত করার জন্য ছিল এইগুলি আসলে সেইম বেইজ এর মধ্যে কাজ করে। তো রিফাত হাসান-এর ব্যাপারে আমার যদি অবজারভেশন বলেন মেইন অবজারভেশন হচ্ছ এ জায়গাটা, যে উনি যে প্রিমাইজগুলির সমালোচনা করতেছেন বা ক্রিটিকাল হইতেছেন, ওই প্রিমাইজগুলিতেই আবার বিলং করতেছেন। মানে উনি সেপারেট কোনো প্রিমাইজ তৈরি করতেছেন না, যে এখান থেকে আসলে জায়গাগুলিকে নতুন কইরা দেখা সম্ভব। উনি হচ্ছে এক্সিস্টিং যে প্রিমাইজগুলি আছে সেগুলির কন্টিনিউয়াস এবং খুব স্ট্রং কিছু সমালোচনা উনার বইয়ে রাখছেন।

যেমন মিডিয়ার কথা বলেন যে মিডিয়া এরকম বলতেছে এবং রাষ্ট্রের কথা বলেন, যে একটা পুলিশি রাষ্ট্র হয়ে যাইতেসে। উনি এই জায়গাগুলিকে খুব আর্লি স্টেইজ-এ আইডেন্টিফাই করছিলেন যে, কেয়ায়ারটেকার গভার্নমেন্ট হইতেছে এখানে যে এডমিনিস্ট্রেটিভ এলিটরা আছে, মানে সুশীল সমাজ আছে সেইটার এক্সটেনশন; ৯০-এর গণঅভ্যুত্থান এর পরে যা হইল; মানে এটা আসলে একটা আরবান মুভমেন্টই ছিল। তো, নব্বই এর পরে যা-ই হোক একটা টাইম তো ক্রিয়েট হইছিল। ১৯৭১ এর পরে একটা মোমেন্ট ছিল আসলে হচ্ছে ১৯৯০/১৯৯১।  তখন এরপরে আসলে কোনো সলিউশনের জায়গাতে আমরা যাইতে পারি নাই। এবং যে সলিউশনগুলা তৈরি করা হইছে সেটা আসলে কোনো স্ট্রং বেইজ তৈরি করতে পারে নাই। তো এই জায়গাগুলোতে হি ওয়াজ আরলি টু কমেন্ট/আরলি টু লোকেট।

কিন্তু, মিডিয়ায় সমালোচনা উনি করতেছেন যে, মিডিয়াতে এরকম এরকম হচ্ছে, পুলিশের ব্যপারে করতেছেন যে, এটা একটা পুলিশি রাষ্ট্র হয়ে যাচ্ছে, এই জায়গাগুলোতে মিডিয়ায় সমালোচনা করে কিন্তু আবার মিডিয়াকেই রেফারেন্স হিসেবে ইউস করতেছেন। তখন আসলে হইতেছে কি, এই জায়গাগুলো বারবার একই এনালাইসিস করার ফলে, নতুন কোনো প্রিমাইজ তৈরি করতে না পারার ফলে জায়গাগুলি আসলে আর সরতেছে না।

আপনি একটা কন্টিনিউয়াস সমালোচনা করে যাইতেছেন। কিন্তু সমালোচনার পরবর্তীতে গিয়ে আপনি কোন জায়গাটাতে রিচ করতে চাইতেছেন সেই জায়গাগুলি আর ওপেন হইতেছে না আর কি।

আরেকটা কি-পয়েন্ট, যেটা মনে হইল, সেটা হচ্ছে ডেমোক্রেসি এবং ফেসিজমের জায়গাটাতে উনার একটা কমেন্ট আছে, উনার কথা হইতেছে যে ডেমোক্রেসি তো একটা সময় ফেসিজমের দিকেও আসলে টার্ন করে, মানে ইলেকশনের গণতন্ত্র যেটা। যেমন ১০৯ নাম্বার পেইজ এ উনার এই কথাটা আছে যে “এই নির্বাচনি গণতন্ত্র যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠের একনায়কতন্ত্রই জারি থাকে বৈধ ভাবে, সেটি এমনকি গঠনগত দশাতে ফ্যাসিবাদের পথ উন্মুক্ত রাখে।” তো, এটা আসলে আমার কাছে একটু প্রবলেমেটিক মনে হয় যে আপনি আসলে ডেমোক্রিসিকে কিভাবে দেখতেছেন। ডেমোক্রেসিকে কিন্তু দেখতেছেন হচ্ছে যে নির্বাচন গণতন্ত্র হিসেবেই, কিন্তু ডেমোক্রেটিক সোসাইটি যদি আপনি বলেন তাইলে এটার ওয়ে ফরওয়ার্ড কী হতে পারে। 

উনি লেখাটা লিখছিলেন ২০০৯ সালে, তখন কিন্তু ইলেকশনের ব্যাপারে একটা নেগেটিভ সেন্স বা একটা নেগেটিভিটি ছিল আমাদের বিপ্লবীদের মনে। আমি এই রেফারেন্স’টা আরো দুই-এক জায়গায় দিসি যে, সুদীপ্ত কবিরাজ হচ্ছে এই জায়গাটা যত সুন্দরভাবে আইডেন্টিফাই করতে পারছেন আমি আর কাওরে এত সুন্দর করে আইডেন্টিফাই করতে দেখি নাই, সেটা হচ্ছে, উনি বলছিলেন, পশ্চিম-বাংলার  কমিউনিস্টরা ডেমোক্রেসিকে কিভাবে এনকাউন্টার করবেন, বিপ্লব করতে গিয়ে সে জায়গাটাকে উনারা আসলে লোকেট-ই করতে পারেন নাই। তো ফেলাসিটা আমার মনে হইসে যে এখানেও আছে। মিনিমাম একটা ইলেক্ট্রোরিয়াল প্রোসেস থাকাটা, এটা অবশ্যই পুঁজির জায়গা থেকে হচ্ছে ঝামেলাজনক। কিন্তু এই থাকাটা কখনোই নেগেটিভ ঘটনা হইতে পারেনা আরকি। একটা ইলেকশনের ভিতর দিয়ে একটা জিনিস আসছে বলেই সে ইলেকশন প্রোসেস’টা খারাপ না। 

কালচারাল এবং পলিটিকাল জায়গা নিয়েও কথা হচ্ছিল, যে এটাতো আসলে পলিটিকাল চেইঞ্জ-এর ঘটনা বা কালচারাল জিনিসগুলি পলিটিকাল ঘটনারে কতটা চেইঞ্জ করতে পারে। কিন্তু এই দুইটা তো আসলে অনেক বেশি রিলেটেট, মানে একটার সাথে আরেকটা খুবই রিলিভেন্ট একটা ঘটনা। আপনি দেখবেন এখনকার সময়ে মিডিয়ার যে করসাজিটা হয়, সে কারসাজির মেইন ঘটনা হইতেছে যে আপনার কালচারাল ঘটনারে পলিটিকালি দেখানো এবং পলিটিকাল ঘটনারে কালচারালি দেখানো। এই দুইটা এমন ভাবে প্যাক্ট হয়ে আছে যে, এটারে আপনি আলাদাই করতে পারবেন না। শাহবাগের ঘটনাটা দেখেন, শাহবাগের ঘটনাটা হইতেছে একটা কালচারাল কনফ্লিক্ট, যেটাকে দেখানো হইসে একটা পলিটিকাল কনফ্লিক্ট হিসেবে… এটা হচ্ছে আমার কথা। 

যেমন ধরেন, সিংগাপুরের ঘটনা যদি দেখেন, উনারা যখন হচ্ছে মালয়েশিয়া থেকে বের হয়ে আসলেন, বের হয়ে যখন ইন্ডিপেন্ডেন্ট হইলেন, তখন ওইখানে মালয় এবং চাইনিজ এবং অন্যদের মধ্যে রায়ট দেখা দিল। বাংলাদেশেও যদি দেখেন, পাকিস্তান হওয়ার পরও কিন্তু ওখানে হিন্দু-মুসলিম রায়ট’টা দেখা দিল। এইযে একটা কালচারাল কনফ্লিক্ট, সে জায়গাটাকে হচ্ছে পলিটিকালি এটাকে আরো জাগায়ে দেয়া হইসে। এখনকার সময়েও, এটা হচ্ছে যে ইসলাম ভারসেস বাঙালি, বা ইসলাম ভারসেস নারী। এই যে কালচারাল কনফ্লিক্ট, সেটাকে হচ্ছে পলিটিকালি ইউস করা হইতেছে। তো এমন না যে এই কালচারাল গ্যাপগুলি থাকবে না। আমার কথা হইতেছে, এটাকে যদি আপনি পলিটিকালি মেনেইজ না করেন, তাহলে সেটা একটা ঝামেলার জিনিস হয়ে উঠবে। এবং যে কোনো টোটালিটারিয়ান রেজিম হচ্ছে এরকম কালচারাল কনফ্লিক্টগুলাকে ক্যাপিটালাইজ না করার মাধ্যমে টিকে থাকতে পারবে না। মানে কালচারাল কনফ্লিক্ট থাকবেনা – তা না, বা কালচরাল বেইজটাই পলিটিক্সটাকে ড্রাইভ করবে এরকম না, বরং দুইটাতো আসলে দুই ধরনের ঘটনাই।

কিন্তু আপনি যখন কালচারালি লিনিয়ার করতে যাবেন, সেটাতো পসিবল না এবং সেটা হচ্ছে সবচেয়ে বাজে ঘটনা। তো, এখানে এই এই জায়গাগুলিকে আমার মনে হইছে যে, যে ফরমেট আছে চিন্তার, সেটাকে এজ ইট ইজ একটা ধইরা রাখা, এবং তারপরে হচ্ছে ক্রিটিক করা। মানে এখানে এই জায়গাগুলিকে যেভাবে আমরা দেখি, সেই বেইজলাইনগুলির ক্রিটিক নাই – তা না, কিন্তু ক্রিটিকগুলির পরে আমরা আসলে কোন বেইজলাইন থেকে দেখব – এই জায়গাটা আসলে একটা ভ্যাকুওয়াম হয়ে আছে, উনার লেখালেখির মধ্যে।

আরেকটা সিগনিফিক্যান্ট ঘটনা আমার কাছে মনে হইছে যে, উনি হচ্ছে যে পরবর্তীতে, প্রথমে তো উনি আসলে বলা যায় যে উনার বলার জায়গাটাকে ক্লিয়ার করছেন, উনার ভূমিকাতে বা পরবর্তি লেখাগুলোতে। তারপর হচ্ছে উনি পরসোনাল জায়গাগুলিতে চলে আসছেন, যেমন ধরেন শাহবাগ হেফাজত নিয়ে কথা বলার পরে উনি উনি কথা বলতেছেন হচ্ছে উনি যে কউমি মাদ্রাসায় পড়ছেন, তারপর হচ্ছে উনার পারসোনাল ফিলিংসগুলি, উনি যে হেফাজতের সমাবেশের দিন গেলেন, কি দেখলেন সেটার পারসোনাল একটা স্টেটমেন্ট, একটা এক্সপেরিয়েন্স রাখার চেষ্টা করছেন। তো, এইটা খালি ইদানীংকালে না, আরো ৮-১০ বছর আগে থেকে এইটা চালু ছিল। তখন আমার কাছে মনে হইতো যে, ওকে ঠিকাছে এটাতো হইতেই পারে, কিন্তু এখন আমার কাছে এটা একটু নেগেটিভ ঘটনা মনে হয়। নেগেটিভ ঘটনা হইতেছে যে, হিস্ট্রিরে আপনি পারসোনাল এক্সপেরিয়েন্স দিয়ে রিপ্লেস করতে পারেননা, বা সাহিত্যকে আপনি হিস্ট্রির অলটারনেটিভ বানাইতে পারেননা। যে আরে দেখেন এই বইয়ে তো এরকম আছে, এই গল্পে তো এরকম আছে… এটাকে লিনিয়ার একটা জিনিস হিসেবে নেয়া যাইতে পারেনা, সেটাকে ক্রিটিকালি দেখতে পারতে হবে। যখন মিডিয়াতে বলা হইতেছে যে, হেফাজতে তান্ডব লাগাচ্ছে, এটা হইতেসে, ওইটা হইতেসে, এটার এগেইনস্ট এ যদি বলেন যে, আমি তো দেখছি যে, না এরা তো ফুল নিয়া যাচ্ছে, এরা তো হচ্ছে লোকজনকে পানি দিচ্ছে। এটা হয়ে যাইতেছে সেইম গ্রাউন্ডের ঘটনা। মানে আপনি একটা পারসোনাল এক্সপেরিয়েন্স দিয়ে যেন প্রোপাগান্ডাকে প্রতিহত করতেছেন।

এখন প্রোপাগান্ডাকে তো এমনিতেই আমাদের বাতিল করা উচিত, এটাকে যদি আমি পারসোনাল লেভেলে নিয়ে আসি সেটা পদ্ধতি হিসেবে একটা ঝামেলার জিনিস হয়। যেমন ধরেন ওই যে হিটলার সুন্দর ছবি আঁকতেন, তারপর প্রাইম মিনিস্টার বিরিয়ানি রাঁধতেছেন, এইরকম পারসোনাল জায়গাগুলি যে নাই তা না, কিন্তু এই পারসোনাল জায়গাগুলিকে যখন  হিস্ট্রির এনকাউন্টার হিসেবে হিস্ট্রির একটা জাস্টিফিকেশানের টুল হিসেবে নিয়ে আসা হয়, তখন আমার ধারনা এটা প্রোবলেমেটিক। মানে পারসোনাল হিস্ট্রিগুলিকে আমরা নিবো না – তা না, কিন্তু এটাকে যখন আমরা একটা হিস্ট্রিকাল পজিশনের একটা জায়গা হিসেবে নিবো, এটাকে এজ ইট ইজ নেয়াটা খুব কঠিন। এবং এই যে নেয়ার পজিশনটা, এটা অনেকটা ডিফেন্সিভ আমার কাছে মনে হয়। যেন আমি আসলে প্রোপাগাণ্ডার জায়গাটাকে এনকাউন্টার করতে পারতেছি না তো কি করার,  তাহলে আমি এটাই করি। বা ভুল নেরেটিভটা আসে সেটা আমি কি বলব, আমি তো বলছি, বলার পরেও আর কিছু করা যাইতেছে না, ঠিকাছে এখন আমি পারসোনাল লোকেশনে গিয়ে হচ্ছে আমার কথাগুলি বইলা দিলাম। মানে, পারসোনাল মেমোরি, অটোবায়োগ্রাফি এগুলাকে হিস্ট্রিকাল ডকুমেন্ট হিসেবে নেয়া যাবেনা – তা না, কিন্তু এগুলিকে নেয়াতে একটু সাবধান থাকাটা ভালো, যে আমরা আসলে কোন সেন্স-এ নিব। এবং এটা যদি একটা টুল হয়ে ওঠে, সেটা আমার মনে হয় যে একটা হিস্ট্রি না থাকার ঘটনা। সেটা একটা ভালো টুল না আর কি।

যেমন ধরেন এখানে শাহবাগ নিয়ে কথাগুলা, হি ওয়াস ক্লোজ, মানে আমার ধারনা যে উনি যে অ্যানালাইসিসটা করছেন। আমি যেভাবে দেখছি বা আমি যেভাবে দেখি আরকি, এটা হচ্ছে একটা রিয়ালিটির উপরে মিডিয়ার বিজয়। যে, শাহবাগে যারা ছিল, উনারা ছিল হচ্ছে ডামি জনগণ। যে এদেরকে জনগণ বানাই ফেলা হইসে। তখন হেফাজতের যে ঘটনাটা ঘটছে, উনারা দাবি করতি চাইছেন যে উনারাও তো আসলে জনগণ। কিন্তু উনাদেরকে জনগণ হিসেবে মিডিয়া আসলে নিতেছে না। তো সমস্যাটা তো আসলে কাকে মিডিয়া জনগণ হিসেবে নিবে বা কাকে নিবে না – তা না, ঘটনাটা হইতেছে মিডিয়াকে আমরা কেন জনগণ নির্বাচনের সেন্ট্রাল পয়েন্ট হিসেবে আইডেন্টিফাই করতেসি। ওই জায়গাটা নিয়ে ক্রিটিকাল হইতে পারাটা একটা বেটার ওপেন গ্রাউন্ড আমাদেরকে দিতে পারে।

তো, এরকম আরেকটা জিনিস হচ্ছে – মাটির ময়না, মাটির ময়না নিয়া তারেক মাসুদের উনি প্রশংসা করছেন, রানওয়ে নিয়া সেই প্রশংসা করতে পারেন নাই। কিন্তু আমার কাছে মাটির ময়না পজিটিভ জিনিস মনে হয় নাই। উনি বলতেছিলেন যে তারেক মাসুদ তো চিটাগাং-এ গিয়ে “সুধি সমাজ” কে দেখাইতে চাইছেন। উনি উনাদের জন্যই বানাইতে চাইছেন, উনাদের জন্যই তো আসলে এনকাউন্টার করসেন। যেমন ধরেন ফকির আলমগীরের “ও সকিনা গেছস কিনা ভুইলা আমারে” ওই গান কি রিকশাওয়ালা গাইবে! মানে ওইটা হচ্ছে মিডল ক্লাসের ড্রিম যে রিকশাওয়ালারা এরকম বেদনা নিয়ে তার গ্রামে রেখে আসা বউয়ের জন্য, প্রেমিকার জন্য এই গান গাইবে। তো সেইম গোউস ফর মাটির ময়না। এটা কারা দেখবে? যারা সেকুলার, ইসলাম সম্পর্কে সিমপ্যাথাইজড ওরা দেখবে। কিন্তু গ্রাউন্ডটা তো চেইঞ্জ করেনা। তো এই জায়গা পর্যন্ত যাইতে পারাটা আমার মনে হইসে যে দরকারি। এবং তারেক মাসুদ হচ্ছে, হি ওয়াস লাকি যে উনার পারসোনাল এক্সপেরিয়েন্সটা পলিটিকাল জায়গার সাথে মিলা যাচ্ছে। 

তো এটা একটা ইমপোর্ট্যান্ট ঘটনা, উনি যেটা বলছেন যে, উনার বইয়ের যে থিমটার সাথে উনি মিলাইছেন, যে হচ্ছে আসলে সম্পর্ক দিয়েই রাজনীতিটা হবে। তো এই আগে যেটা ছিল হচ্ছে যে, পারসোনাল ইস  পলিটিকাল… তো এটা আমার কাছে ওয়ান ওয়ে রাউন্ড মনে হয়নাই। এটা বোথ ওয়ে রাউন্ড। মানে, পলিটিকাল পজিশনটাই যেমন আপনার রিলেশনটাকে তৈরি করতেছে, আপনার রিলেশনগুলিও আসলে আপনার পলিটিকাল পজিশনগুলাকে তৈরি করতেছে। দুইটা দুইরকম সাইমোলটিনাসলি অপারেট করতেসে, ইটস্ ইন ওয়ান প্লেইস। আপনার সম্পর্ক দিয়ে রাজনীতি যেমন হচ্ছে না, রাজনীতি দিয়েও আপনি সম্পর্ক করতেছেন না, দুইটা সাইমোটিনাসলি একই সাথে আছে। আপনি যতক্ষণ পর্যন্ত হচ্ছে আপনার বাকশালি ফ্রেন্ডদের সাথে আছেন, আপনি তখন কখনই টোটালিটারিয়ান রেজিমটার এগেইনস্ট-এ যাইতে পারবেন না। আবার যখন আপনি একটা ফার্ম পজিশন নিয়ে আছেন টোটালিটারিয়ান রেজিমের বিরুদ্ধে, তখন হচ্ছে আপনি কখনই উনাদের বন্ধু হইতে পারবেননা। তো  উনি যে জায়গা থেকে দেখতেছেন, সেই জায়গাটা হচ্ছে যে ওয়ান অর আদার কিন্তু দুইটা সাইমোটিনিয়াসলি যে ঘটতেছে, এই জায়গাটাতে ফোকাসটা আমার মনে হইছে একটা গ্যাপের জায়গা আয়গা আরকি।

তো যদি আমি এটা কনক্লুড করতে চাই, তাইলে বলবো, রিফাত হাসানের বইটা, ইটস্ আ গুড রিডিং। এটার একটা কারন হচ্ছে যে হি হ্যাজ আ সিমপ্যাথেটিক টোন। উনি যে কথাটা বলছেন, উনি একটা এনগেজমেন্টের জায়গা থেকে, একটা দরদের জায়গা থেকে এই কথাগুলি বলছেন। উনি এনগেজ হইতে চাইছেন। উনি কথাগুলি বলতে চাইছেন। 

তো মুশকিলটা হইতেছে যে এই জায়গাটাতে, যে উনি যাদের সাথে তর্ক করতেছেন, এমন একটা অডিয়েন্সের সাথে তর্ক করতেছেন, যারা হচ্ছে সেম প্রিমাইজ-এ বিলং করে। যেমন ধরেন, তারেক মাসুদ যেমন হচ্ছে মাদ্রাসাকে মেইনস্ট্রিমে ইনক্লুড করতে চান, এটাই না খালি, উনি হচ্ছে শিক্ষিত সমাজকেও আসলে বলে যে ব্যাপারটাকে সিমপ্যাথেটিকালি দেখার জন্য। ধরেন ২০০৮-২০১০-২০১২-২০১৩’র দিকে ব্যাপারটা তো ছিলই। যে মাদ্রাসার স্টুডেন্ট যারা আছে ওদেরকে মেইনস্ট্রিমে নিয়ে আসতে হবে। তো ব্যাপারটা আসলে ওই জায়গাটা থেকে অপারেট করছে আরকি। কিন্তু আমি মনে করি এখন তো আমরা বুঝতে পারি যে এটা আসলে ঝামেলারই। যেমন ধরেন ওই ভাষ্কর্য বিতর্ক নিয়ে হচ্ছে একটা কথা আসছিল যে, চারুকলা থেকে বলা হইছিল যে (চারুকলা হচ্ছে যে বাংলাদেশের শান্তিনিকেতন আর কি), আমরা এমন লোকজনের সাথে কথা বলি যারা কবিতা কি বোঝেনা, ফুল কি জিনিস চিনেনা। এই কোটেশনটা উনি দুই-তিন জায়গায় দিছেন। তো এটার এগেইনস্টে আপনার যদি দায়িত্ব হয়ে ওঠে মাদ্রাসার স্টুডেন্টদের, ফুল কি বুঝতে হবে, কবিতা কি বুঝতে হবে – এই ধরনের একটা ভার আসলে চাপানো হবে আসলে। তো আমার কথা হইছে আসলে ফুল কি ভাই এটা বুঝা লাগবেনা, সাহিত্য কি এটা বুঝা লাগবেনা আরকি। বরং আপনি যদি এটা বুঝতে যান, তাইলে সেইম জায়গাটাকে আপনি আসলে অ্যাকুয়ার করবেন। এবং প্রবলেমটা আসলে একই প্রিমাইজে থেকেই যাবে।

আবুল মনসুর আহমেদের রেফারেন্সে কয়েক জায়গায় আসছে। আবুল মনসুর আহমেদের আরেকটা রেফারেন্সের কথা আমি বলি, উনি এই  কথাটা বলছিলেন পাকিস্তান আমলে। আবুল মনসুর আহমেদ তো ওই সময়ের লিটারারি ফিগার, এবং উনি তখন আওয়ামীলীগ থেকে রিটায়ার করছেন, একজন উপদেষ্টা হিসেবে সবাই উনার কাছে যান, উনার সাথে কথা বলেন, উনিও সবার সাথে কথা বলেন।… তো জামাত ইসলমের লোকজন গিয়ে বলতেছেন যে, আমরা একটা পত্রিকা করতে চাই, একটা নাম আমরা সিলেক্ট করছি, আপনি যদি একটু পরামর্শ দেন, সেটা ঠিকাছে কিনা। এরকম দুই-একটা নামের পরে উনারা নাম দিলেন হচ্ছে “দৈনিক সংগ্রাম”। তো তখন আবুল মনসুর আহমেদ অবাক হইলেন যে, কি ব্যাপার আপনারা ইসলামিক নাম দিবেন, আপনারা কেন এরকম “সংগ্রাম” নাম দিচ্ছেন! তো তখন বলল যে, দেখেন আমাদেরকে তো আসলে আপনারা, মানে সেকুলাররা দেখেন হচ্ছে ইসলামিস্ট হিসেবে; এখন আমরা যদি একটু ‘বাংলা’ নাম না দেই, তাইলে তো আসলে আমরা আরো বিপদে পড়ে যাব। তো তখন উনারা হচ্ছে ইসলামি নাম না রেখে দৈনিক সংগ্রাম  নাম রাখলেন আরকি। 

তো এইখানেও সেইম কেইস, মাদ্রাসার স্টুডেন্টদেরকে এখন ‘শুদ্ধ-বাংলা’ বলতে পারতে হবে! এইটা একটা রিকয়ারমেন্ট হয়ে গেছে। উনারা যদি প্রমিত ভাষায় না লিখেন, উনারা যদি শুদ্ধ ভাষায় না লেখেন, তাইলে কিন্তু ভাই বিপদ। বাংলা মিডিয়ামের স্টুডেন্ট হিসেবে আপনি ভাষা নিয়ে ওই যেন-তেন করতে পারেন, কারন আপনি তো বাংলা মিডিয়ামের স্টুডেন্ট। কিন্ত আপনি যদি মাদ্রাসার স্টুডেন্ট হন, এবং আপনি “শুদ্ধ” “প্রমিত” বাংলায় না লেখেন, তাহলে তো আপনি বাংলায় লিখতে জানেননা। আমরা ইংলিশ বলতে গেলে যেরকম হয়, যে ধরেন আসলে ইংলিশ তো উচ্চারণ হয় না। তো এইযে রাজনীতি টা, আপনি যখন ওই প্রিমাইজটাকে সেন্টার করবেন, ওই অডিয়েন্সের সাথে ডিল করবেন, তখন তো আপনারে ওই লেভেলটাতে যেতে হবে। এটাই দেখা যাবে ইস্যু হয়ে যাবে।

তো আমার কাছে মনে হইছে যে ওই ইস্যুটাকে বাতিল করতে পারাটা দরকার। এই বাতিলের জায়গাটাতে আসলে যাওয়ার জন্য যদি এনগেজ হওয়া যায়, জিনিসটা আরো ভালো হয় আরকি। 

আর ওটা তো মাঝখানে বলছি, থার্ড পয়েন্টটা হচ্ছে রিফাত হাসান সবসময় ক্রিটিকাল আছেন। ক্রিটিকাল থাকাটা ভালো জিনিস, কিন্তু এটা যদি কন্টিনিউসলি এমন একটা জিনিস হয় যে, কোনো পজিশনে আমি যাবনা, তাইলে এই জায়গাটা আসলে খুব বেশি সময় পর্যন্ত ভ্যালিড থাকতে পারে না। উনি উনার পজিশনের জায়গাগুলাকে কিছুটা বলছেন, কিন্তু এটা আসলে কোনো একটা ফ্রেম ওয়ার্ক হিসেবে দাঁড়ায় নাই। আমার কাছে মনে হইছে যে তাহলে দেখার জন্য আমরা আসলে কোন ফ্রেমওয়ার্কটাকে ইউজ করতে পারি? উনার লেখা পড়লে যেটা মনে হবে যে আসলে কোনো কিছু আমরা মিস করে যাইতেছি। একটা জায়গাকে আমরা দেখতেছি, সেটা হচ্ছে যে আসলে ভ্যালিড কোন গ্রাউন্ডটা নিয়ে দেখতেছি, সেটা নিয়ে আসলে আমার ধারণা যিনি রিডার, উনি আসলে অ্যাওয়ার হইতে পারবেন। যে একটা ঘটনাকে আমরা আসলে জাস্টিসের জায়গা থেকে দেখতেছি কিনা। আমরা যে প্রিমাইজগুলা থেকে দেখতেছি, সে প্রিমাইজগুলি আসলে ঠিকাছে কিনা। এই একটা কনশাসনেস আমার ধারনা ডেভলপ করার কথা সবার, এটা হইতেছে চোখে পড়ার কথা। কিন্তু দেন এগেইন, এই কনশাসনেসগুলি আমাকে তো আসলে ফারদার একটা পয়েন্টে নিয়ে যাওয়াটা জরুরি। সেই জায়গাটা কী, এবং কোনগুলি –  সেগুলি হচ্ছে উনি আসলে রিডারের উপরে ছেড়ে দিছেন।

তো আই গেস যা হইছে তো খারাপ হয় নাই। মানে আমার ধারনা বাংলাদেশে যারা চিন্তাভাবনা করতে চান, কনটেমপোরারি ইস্যুগুলা নিয়ে ভাবেন বা কথা বলেন, ফেইসবুক আসার পর তো এটা আসলে আরো জরুরি হয়ে গেছে, এখন আবার হারায়ও যাইতেছে। এখন আসলে বলার কিছু নাই এরকম একটা স্টেজ-এ আমরা আছি। তো, তারপরও আমার ধারণা, বাংলাদেশে কোন জায়গাগুলি থেকে একটা সময় চিন্তা হইছিল, সেই জায়গার একটা ভাল ডকুমেন্টশন হইতেছে এই বইটা। 

সো, দ্যাটস মাই রিডিং।

ইমরুল হাসান, কবি ও বুদ্ধিজীবী।

Leave the first comment